Monday, March 31, 2014

শিক্ষায় বিভিন্ন ভাষা মাধ্যম :বিপর্যয় না সমৃদ্ধি :: দৈনিক ইত্তেফাক (ফজলুল আলম)

ফেব্রুয়ারি মাস চলে গেলেও ভাষা নিয়ে আলোচনা বহমান থাকা উচিত বলে আমি মনে করি ভাষা আন্দোলনের গৌরবময় ঐতিহাসিকতা পর্যালোচনা ছাড়াও আজকাল বিত্তবান সচ্ছল পরিবারের সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা বাংলা লেখায় কথায় ইংরেজি শব্দের আগ্রাসন নিয়ে বেশ হাহাকার বিলাপ শোনা যায় কৃতবিদ্য আহমদ রফিক সম্ভবত অভিমানভরেই আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রে প্রকট শ্রেণী বিভাজনের কথা স্মরণ করে বললেন- উচ্চবিত্তদের সন্তানদের শিক্ষায় একটা 'ইংলিশ ভার্সন' থাকে থাকুক অপরদিকে 'বাংলা থাকুক তার বুলিতে, সাহিত্য-সংস্কৃতিচর্চায় বিপুলসংখ্যক অশিক্ষিত বাঙালির জৈবনিক ভাষা হিসেবে' এভাবে সমস্যার সমাধান করে লেখক একটি 'আন্তর্জাতিক চেতনার বাঙালি' আশা প্রকাশ করলেন তাঁর বক্তব্য থেকে কয়েকটা পার্শ্বচিত্র আমাদের সামনে ভেসে ওঠে একটা হলো ইউরোপে গ্রামার স্কুল ( অনেক পাবলিক স্কুল নামে পরিচিত বেসরকারি স্কুল) সরকারি বিদ্যালয়ের বিভাজন গ্রামার পাবলিক স্কুল থেকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় তুখোড় ছাত্রছাত্রীরা 'ব্যুরোক্রেসী' 'ফরেন সার্ভিসে' যোগ দেয় অন্যান্য স্কুল থেকে বাধ্যতামূলক ষোলো বছর বয়সের পরে প্রায় ৬৫ শতাংশ শিক্ষাক্ষেত্র ত্যাগ করে বিলাতের সমাজ এই শিক্ষা বিন্যাসের ফলে প্রায় অপরিবর্তিত থেকে যায়সেখানে শিক্ষার সংস্কৃতিতে সমাজের বিভাজন বজায় থাকে আমাদের দেশে শিক্ষা তিন মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে: ইংরেজি, বাংলা আরবি এতেও এক ধরনের সামাজিক বিভাজন সৃষ্টি হয় আকাশ সংস্কৃতি থেকে প্রাপ্ত ভিন্ন ভাষার কথা এখানে আর উঠালাম না স্বাভাবিকভাবেই এসবে একটি মিশ্র ভাষাভিত্তিক সাংস্কৃতিক বিভাজন আমাদের দেশে বিকশিত হচ্ছে খুব সুখপ্রদ না হলেও এটাই বাস্তব অবস্থা


আমাদের ভাষা ব্যবহারে দ্বিতীয় একটি বিব্রতকর বাস্তবতা হলো বাংলা বচনে ইংরেজি শব্দের ও কখনো কখনো বাক্যের ব্যবহার। এর জন্য আমি পুরোপুরি 'ইংলিশ মিডিয়াম' শিক্ষাকে দায়ী করি না। আমি নিজেও লজ্জিত যে ভাষা আন্দোলনের দিন একটি চ্যানেলের টক-শো'তে আমি নিজে 'ট্যাক্ল' শব্দটি ব্যবহার করে ফেলেছিলাম। একবার একঝলক বাংলা শব্দ 'মোকাবেলা' বা 'বাগে আনা' বলব বলতে গিয়ে ভেবেছিলাম যে ওই দুটো বাংলা শব্দের কোনোটাতেই আমার ধারণা পরিষ্কার হবে না। এটা আমার ও অনেকের ভাষাচর্চার দুর্বল দিক তুলে ধরে। তবে দুর্বল দিক তুলে ধরলেও সেটাকে আমি অপরাধ মনে করি না। ভাব প্রকাশের জন্য যথাশব্দ যে কোনো ভাষা থেকে টেনে আনার অধিকার সব ভাষাভাষি নরনারীর আছে এবং সেটা করলে নিজের ভাষাকে অসম্মান করা হয় না। এর পিঠে বলা যায় একজন ইংরেজ ব্যক্তিকে আমি করুণা করি কারণ সে আমার মতো নিজ ভাষায় যথাশব্দ খুঁজে না পেয়ে শুধু 'আই মীন আই মীন' বলে খাবি খাবে, আমার মতো অন্য ভাষা থেকে শব্দ আনতে পারবে না, কারণ সে অন্য ভাষা জানেই না। ঔপনিবেশিকতার কারণেই হোক বা বর্তমানে আন্তর্জাতিকতার উদ্দেশ্যেই হোক, অন্য একটা ভাষা জানা থাকলে ও প্রয়োজনে সাবলীলভাবে ব্যবহার করতে পারলে কোনো ক্ষতি নেই—এটাকে অর্জন বললে ক্ষতি কী?

আমাদের সংস্কৃতিতে নেই তেমন কিছু ভাবপ্রকাশে আমরা ইংরেজি শব্দ বাধ্য হয়ে ব্যবহার করছি, যেমন প্লিজ, থ্যাংক ইউ (ও প্রত্যুত্তরে ওয়েলকাম), বাই, সি ইউ। আমাদের সংস্কৃতিতে কথায় কথায় ধন্যবাদ দিতে হয় না। হাস্যকর হলেও এটা সত্যি যে বিলাতে একটা সামান্য কিছু কিনতে বেশ কয়েকবার প্লিজ থ্যাংকু ও ওয়েলকাম বলা স্বাভাবিক। বাংলায় প্লিজের বদলে 'অনুগ্রহ করে' বললে বিসদৃশ শোনাবে। কিন্তু আমাদের ভাষার কেরামতিতে ও আমাদের অভিব্যক্তিতে বিনয় এমনিতেই প্রকাশ হয়। থ্যাংকুর বদলে আমরা ধন্যবাদ বলি না, আমরা স্মিত হেসে সেটার স্বীকৃতি দেই। তবে বাংলাভাষায় যত শব্দ আছে তার সবই কথায় ব্যবহূত হয় না। না হওয়ার কারণ অনেক হতে পারে, তবে প্রধান কারণ হচ্ছে চলতি ভাষায় কিছু শব্দের প্রয়োজন হয় না, এবং সাধু (বিশেষত লিখিত) ভাষাতেও অনেক শব্দের চর্চা হয় না। আবার এমনও হতে পারে যে অতি জটিল বিষয় আলোচনা করতে গেলে যেসব শব্দের প্রয়োজন হয় সেসব সর্বদা চর্চিত হয় না। ইংরেজি অনেক শব্দের চর্চা অত্যন্ত সীমিত। বাংলাভাষায় অনুরূপ অনেক শব্দ আছে যেসবের চর্চা হয় না। সেটা ভাষিক সমস্যা। তবে মজার কথা 'মেরুকরণ' শব্দটা আমাদের মধ্যে প্রচলিত হয়ে গেছে সহজেই, এর বদলে ইংরেজি পোলারাইজেশন আমরা ব্যবহার করি না, অপরদিকে 'চ্যালেঞ্জ' প্রায় সর্বত্র গৃহীত। আমরা অনেক ভাব প্রকাশে সহজ ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করি একমাত্র সংস্কৃতিগত পার্থক্যের জন্য, এবং তাতে সংস্কৃতির পার্থক্য স্বীকার করা হয়। এই পার্থক্য স্বীকারের মধ্যদিয়ে আমরা ধরে নিতে পারি যে 'ইংলিশ ভার্সন' বিপর্যয় মনে হতে পারে, কিন্তু এমনও তো হতে পারে যে আগামীতে আমাদের ভাষা এভাবেই অন্য ভাষা চর্চায় সমৃদ্ধি অর্জন করবে, যেমন আমি এখনো খুঁজছি 'ট্যাকল' শব্দটার যথাযথ বাংলা কী হবে।

বিদেশি ভাষার আগ্রাসনকে সমৃদ্ধি ভেবে নিলে এমনও বলা যায় যে তিনটি ভাষা মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানে আমাদের জাতীয় জীবন সমৃদ্ধ হতে পারে। তবে শর্ত থাকতে হবে এই তিনটি মাধ্যম একে অপরের সম্পূরক হতে হবে, একে অপর থেকে ভিন্ন বলয়ে থাকলেই বিপর্যয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিপর্যয়ই হচ্ছে, কারণ তিনটি ভাষার মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থায় উদ্দেশ্য সামজিক বিভাজন বজায় রাখা—বিত্তবান, স্বল্পবিত্ত ও বিত্তহীনতার ভিত্তিতে শিক্ষার আয়োজন সমৃদ্ধি আনবে না। এর ফলে দেশে যে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বিভাজন সৃষ্টি হয় সেটা কি আমাদের আকাঙ্ক্ষিত?

লেখক: কথাসাহিত্যিক ও সংস্কৃতি গবেষক

Sunday, March 09, 2014

৩৪ তম বিসিএসঃ এক মাসে আসলেই কি কিছু সম্ভব?

৩৪ তম বিসিএসঃ এক মাসে আসলেই কি কিছু সম্ভব?

March 9, 2014 at 10:35am

৩৪ বিসিএস এর আদৌ কোন ভবিষ্যৎ আছে কিনা তা নিয়ে দুদিন আগেও যারা হতাশায় নিমজ্জিত ছিলেন তাদের অনেকেই আজ ৩৪ তম বিসিএস এ তাদের কিছু হবে কিনা কিংবা তারা উত্তীর্ণ হবেন কিনা তা নিয়ে হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে গেছেন বা যাবেন অচিরেই, বিসিএস জিনিসটাই এমন, অনেক দিন ধরে কোন কিছুর অপেক্ষায় থাকতে থাকতে যখন হতাশ হয়ে যাবেন তখনই পিএসসি হুট করে কোন নিউজ দিয়ে প্রার্থীদের ব্যস্ত করে দেয়;
৩৪ তম বিসিএস এর পরীক্ষার তারিখ জেনে হয়ত অনেক প্রার্থীই ভাবছেন, এত স্বল্প সময়ে কিভাবে প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব? আদৌ কি সম্ভব? প্রস্তুতি নিয়ে আদৌ কোন কিছু করা যাবে? এমন অজস্র উদ্ভট প্রশ্ন ভাবতে ভাবতে এক সময় এই মূল্যবান একটি মাস ও নস্ট হয়ে যাবে, অতঃপর আবারো হতাশা;
জোসেফ স্ট্যালিনের একটি বিখ্যাত উক্তি আছে, তা হচ্ছে, “I believe in one thing only, the power of human will”
অদম্য ইচ্ছা শক্তির জোরে অনেক সাধারণ মানুষের অনেক অসাধারণ অসাধ্যকে সাধন করে ফেলার ভুরি ভুরি রেকর্ড আছে এই তাবৎ দুনিয়ায়, তাই এই মুহূর্তে ৩৪ তম বিসিএস প্রার্থীদের মূলত জোর দিতে হবে ইচ্ছা শক্তির উপর, মনের মধ্যে একটি শব্দকেই জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে যা হচ্ছে “সম্ভব”;

আদৌ কি সম্ভব?

বিগত বিসিএসগুলোতে সফল অনেককেই খুজে পাওয়া যাবে যারা এক মাসও নয় , মাত্র ২০-২৫ দিন পরিশ্রম করেই কোন প্রকার বিশেষ সুবিধা (প্রাধিকার, ইত্যাদি) ছাড়াই শুধুমাত্র মেধায় ক্যাডার পেয়েছেন, কাজেই প্রস্তুতির জন্য এক মাস নিঃসন্দেহে পর্যাপ্ত সময়;

কিভাবে সম্ভব?

অধিকাংশ পরীক্ষার্থী ,বিশেষ করে নবীনরা (প্রথমবার পরীক্ষার্থী) যে ভুলটি করে থাকে তা হচ্ছে, বিগত বছরগুলোর প্রশ্ন সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ না করা কিংবা প্রশ্নের ধাঁচ/ ট্রেন্ড কোন দিকে যাচ্ছে তা অনুধাবন না করা, অথচ কিছু কমন সেন্স খাটিয়ে খুব অল্প সময়েই যা করা সম্ভব;
বিসিএস এর সিলেবাস অনেক বিশদ হওয়ায় , এক মাসে সবকিছু পড়ে ফেলা সম্ভব নয়, তাই এই মুহূর্তে কৌশলী হওয়া উচিত, কম ইনপুটে বেশি আউটপুট পাওয়া যায় এমনভাবেই প্রস্তুতি নেয়া উচিত, এজন্য একটি দুর্দান্ত পরিকল্পনা (প্ল্যানিং) করা যেতে পারে, তবে তা অবশ্যই বাস্তব সম্মত হতে হবে;
কিছু কিছু সাবজেক্টকে বিসিএস এর ৯০০ মার্কসের পরীক্ষায় নম্বর তোলার জ্যাকপট বিবেচনা করা হয়, এগুলো হচ্ছে গনিত ও মানসিক দক্ষতা, সাঃ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী, এছাড়াও বাংলাদেশ বিষয়াবলী দুটি পত্রতেও ভাল নম্বর তোলা সম্ভব, বাংলা প্রথম ও ইংরেজি প্রথম পত্রতেও ভাল নম্বর তোলা সম্ভব, তবে বাংলা ২য় ও ইংরেজি ২য়তে এই অল্প সময়ে খুব বেশি পরিশ্রম করেও ভাল নম্বর তোলার কোন নিশ্চয়তা পাওয়া যায় না, প্রতিটি সাবজেক্ট পড়ার সময়ই একটু কৌশলী হওয়া জরুরী;

গনিতঃ

প্রথমেই ১০ম থেকে ৩৩তম বিসিএস এর সকল প্রশ্নগুলো সমাধান করে ফেলা উচিত, তারপর উক্ত প্রশ্নগুলোর নিয়মের অন্যান্য প্রশ্ন অনুশীলন করা উচিত, অনেকেই জ্যামিতিকে বাদ দেয়ার চিন্তা করে থাকেন, অথচ সামান্য পরিশ্রম করলে বিগত বছরগুলোর জ্যামিতি প্রশ্ন খুব সহজেই আয়ত্ত করে ফেলা সম্ভব, পরীক্ষার হলে অনেক সময় পাটীগনিত বা বীজগণিতের কোন প্রশ্ন সমাধা করা না গেলে জ্যামিতি থেকে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যেতে পারে, বাজারে প্রচলিত গাইড বইকে অনেকে তাচ্ছিল্যের সাথে দেখে নবম-দশম শ্রেনীর টেক্সট বই পড়া শুরু করে দেন, এত অল্প সময়ে এত কিছু পড়ার সময় নেই তাই প্রচলিত গাইড বই থেকেও পড়া যেতে পারে, তবে অবশ্যই নির্ভুল নিয়মেই অঙ্ক শিখতে হবে, কারণ গাইড বইতে অনেক সময়েই ভুল ভ্রান্তি খুজে পাওয়া যায়;
মানসিক দক্ষতার জন্য বিগত বছরের প্রশ্ন ঢালাওভাবে অনুসরণ না করে বরং শুধুমাত্র ৩৩ তম এর প্রশ্নের প্যাটার্ন এ প্রস্তুতি নেয়াটা অধিক সমীচীন হবে, তবে প্রতিটি বিসিএস এর প্রশ্নই গুরুত্বের সাথে সমাধান করা উচিত;

বিজ্ঞানঃ

বিজ্ঞানের প্রায় ৭৫ মার্কসের প্রশ্ন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আগের বিসিএসেরগুলোই পুনরাবৃত্তি হয়, তবে যেহেতু ২৭ তম বিসিএস থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নে গঠনগত পরিবর্তন হয়েছে তাই শুধু ২৭ থেকে ৩৩ তম বিসিএস এর প্রশ্ন ভালোভাবে আত্মস্থ করে ফেলা আবশ্যক, প্রযুক্তি পার্টের কম্পিউটার এবং ইনফরমেশন টেকনোলজির ২৫ মার্কস নতুন ধারার প্রশ্ন বেশি হয়, এক্ষেত্রেও পুরনো প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি ঘটলেও তা অনেক কম, এই ২৫ মার্কসের জন্য ভাল করতে হলে নবম দশম শ্রেণীর তথ্যপ্রযুক্তি বই থেকে শুধুমাত্র বিসিএস এর সিলেবাসে উল্লেখ করা টপিকগুলো ভালোভাবে পড়া যেতে পারে;
বিজ্ঞান পরীক্ষা দেয়ার সময় একটু স্মার্ট ও দ্রুত হওয়া জরুরী , উত্তরপত্র লেখার সময়ের টেকনিক নিয়ে এই লেখার শেষে আলোচনা করা হবে ।  

(16/2/2014)

আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীঃ

একটু টেকনিক্যালি পরিশ্রম করলে এই সাবজেক্টটাতে উচ্চ নম্বর তোলা অনেক সহজ, এই বিষয়ে বিগত বছরের প্রশ্ন পুনরাবৃত্তি ঘটার হার তুলনামূলক কম, তবে বড় প্রশ্নের ক্ষেত্রে কম বেশি পুনরাবৃত্তি হয়;
২ মার্ক করে যে দশটি ছোট প্রশ্ন থাকে এবং টীকার (৪X৫=২০) উত্তর সঠিকভাবে দেয়ার জন্য সাম্প্রতিক বিষয়গুলোতে দখল থাকা জরুরী, তাই বিগত ৩-৪ মাসের কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, ইত্যাদি পড়ে ফেলা উচিত অথবা নতুন বিশ্ব/ আজকের বিশ্ব, ইত্যাদি থেকে সাম্প্রতিক আপডেটগুলো অবশ্যই পড়া উচিত;
বড় প্রশ্ন কিংবা টীকা উভয়ের জন্যই অধিকাংশ প্রার্থী বিশাল বিশাল গাইড বই দেখে ভড়কে যান, অথচ পিএসসির দেয়া সিলেবাস থেকে শুধুমাত্র সেলেক্টেড টপিকগুলো পড়লেই প্রায় সিংহভাগ প্রশ্ন কমন পাওয়া যেতে পারে;
সকলের সুবিধার্থে ছোট প্রশ্ন,টীকাও বড় প্রশ্নের জন্য টপিকগুলো নিচে দিলাম (যদিও এটা মূলত পিএসসির সিলেবাসেরই পুনরাবৃত্তি)

  • জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদ
  • জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ
  • জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা মিশন
  • আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত
  • অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ
  • রিও কনফারেন্স
  • কায়রো কনফারেন্স
  • বেইজিং কনফারেন্স(নারী),CEDAW
  • NATO
  • NAM
  • Commonwealth
  • ASEAN, BIMSTEC, OPEC, OAS, APEC, NAFTA, AU, OAS, GCC
  • SAARC SAPTA,SAFTA, EU, OIC
  • G-8, G-77, LDC, ADB, ADB, WB, GATT/WTO, EU Bank, IMF, IsDB
  • অস্ত্রীকরণ-নিরস্ত্রীকরণ, NPT,CTBT,SALT,START,INF,SORT,SDI,ICBM
  • বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি
  • বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক
  • বাংলাদেশ মিয়ানমার সম্পর্ক
  • মুক্তবাজার অর্থনীতি ও বিশ্বায়ন, বৈশ্বিক অর্থনীতি মন্দা
  • Economic Diplomacy, GSP, Foreign Loan and Grant, Intellectual Property Rights, TICFA, TRIPS,FDI
  • সমুদ্রসীমা
  • MDG, SDG
  • ইত্যাদি
শুধু এক গাদা পড়লেই ভাল করা যাবে এমনটা নয়, লিখিত পরীক্ষার সময়ে উত্তর লেখার সময়ে একটু স্মার্ট হওয়াটা জরুরী , তার চেয়েও জরুরী হচ্ছে টাইম ম্যানেজমেন্ট, কিছু প্রশ্নের উত্তর ভাল লিখতে গিয়ে অনেকেই শেষ পর্যন্ত আর ফুল অ্যান্সার করতে পারেন না, এই লেখার শেষের দিকে প্রতিটি বিষয়ে উত্তর লেখা ও খাতার রিপ্রেজেন্টেশন কেমন হওয়া উচিত তা নিয়েও সংক্ষিপ্ত আকারে বলার চেস্টা করব;

(18/02/2014)

বাংলাদেশ বিষয়াবলীঃ

এই বিষয়ের দুটি পত্রেই ভাল করা সম্ভব । তবে দ্বিতীয় পত্রে ভাল করার জন্য অবশ্যই একটি সলিড প্রিপারেশন দরকার, ৩৩ তম বিসিএস বাদে বাকি প্রায় সবগুলো বিসিএসে ২য় পত্রে সংবিধান থেকে প্রশ্ন এসেছিল, স্বল্প সময়ে পুরো সংবিধান আয়ত্ত/আত্তস্থ করা অনেক কস্টসাধ্য ব্যাপার কিন্তু না পড়লে আরও বড় ঝুঁকি থেকে যাবে । বাংলাদেশ বিষয়াবলীর জন্য প্রস্তুতির জন্য দুটি পত্রকে সমন্বয় করে সম্মিলিত প্রস্তুতি নেয়া যেতে পারে, যার একভাগে থাকবে কিছু সেলেক্টেড টপিক, মূলত বিগত বিসিএস প্রশ্ন ও পিএসসি’র সিলেবাসের ভিত্তিতে সমন্বয় করা টপিকসমূহ , অপরভাগে থাকবে সংবিধান থেকে কিছু সেলেক্টেড টপিক (যেহেতু সময় স্বল্পতার কারণে পুরো সংবিধান পড়া বাস্তবসম্মত নয়), এবং সর্বশেষ ভাগে থাকবে সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের জন্য সাধারণ জ্ঞানের বই থেকে সেলেক্টেড টপিক থেকে সংক্ষিপ্ত প্রশ্নসমূহ;

প্রথম ভাগঃ

বাংলাদেশ বিষয়াবলীর জন্য পিএসসি কর্তৃক প্রদত্ত সিলেবাস ও বিগত বিসিএসের প্রশ্নসম্ভার থেকে কিছু টপিক সেলেক্ট করা যায় , যেসব টপিক থেকেই মূলত সিংহভাগ (৯৫% +) প্রশ্ন হয়ে থাকে, এবং এই টপিকগুলো তথ্যমূলকভাবে পড়লে শতভাগ প্রশ্নের উত্তর করা সম্ভব, প্রতিটি টপিকের উপর ভাল করে পড়ার জন্য বাজারের প্রচলিত গাইড বই পড়লেও পড়া যেতে পারে, তবে পরীক্ষায় ভাল করার জন্য তথ্যবহুলভাবে প্রস্তুতি নেয়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই, তথ্যের জন্য বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বা প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুসন্ধান করা যেতে পারে, কিন্তু যেহেতু সময় অনেক কম, তাই অনেক কিছু না ঘেটে কিছু জিনিস থেকে অধিক তথ্য কিভাবে পাওয়া যায় তা খুজে বের করতে হবে, এজন্য অর্থনৈতিক সমীক্ষা(Economic Review) ও ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (6th Five year plan) এই দুটিই যথেস্ট, এগুলো পাওয়া যাবে যথাক্রমে অর্থ মন্ত্রণালয় ও প্ল্যানিং কমিশনের ওয়েবসাইটে, এই দুটি রিপোর্টই এত বড় যে, শুধু এই রিপোর্ট দুটি পড়েই আগামী এক মাস পার করে দেয়া সম্ভব, কাজেই প্রার্থীদের উচিত হবে, শুধুমাত্র কম সংখ্যক এমন সব তথ্য (গ্রাফ, টেবিল, চার্ট) সংগ্রহ করা যা অনুধাবন করা,মনে রাখা এবং পরীক্ষার খাতায় প্লট করা অনেক সহজ এবং যা প্রায় অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ টপিককে কভার করবে, উদাহরণ স্বরুপ বলা যেতে পারে, Year wise বাংলাদেশের GDP Growth, Foreign Remittance flow, বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রবাহ চিত্র, স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধির প্রবাহ চিত্র ইত্যাদি।
তবে অনেক তথ্যবহুলভাবে পড়াটা শতভাগ বাধ্যতামূলক নয় কারণ কোন প্রকার ডাটা, গ্রাফ, চিত্র ইত্যাদি ব্যবহার না করেও অনেকে সাফল্য পেয়েছেন এমনকি সর্বোচ্চ সাফল্যও পেয়েছেন ;

টপিকসমূহঃ
  • বাংলাদেশের ভূ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য
  • জলবায়ু সমস্যা (বাংলাদেশ ও বিশ্ব)
  • বাংলাদেশের ইতিহাস ৪৭ থেকে ৭১ , মহান মুক্তিযুদ্ধ;
  • দুর্নীতি
  • বেকারত্ব
  • বিদেশী বিনিয়োগ
  • জনশক্তি রপ্তানি
  • জ্বালানী সমস্যা(গ্যাস, বিদ্যুৎ,খনিজ)
  • খাদ্য নিরাপত্তা
  • শিক্ষানীতি
  • নারী (নারীর প্রতি বৈষম্য, নারীনিতি,CEDAW)
  • স্থানীয় সরকার
  • কৃষি
  • শিল্প(পোশাক শিল্প, রপ্তানি বানিজ্য)
  • যানযট
  • দুর্যোগ
  • সুশাসন
  • এনজিও
  • নির্বাচন কমিশন
  • সুশীল সমাজ
  • জঙ্গিবাদ ও বাংলাদেশ
  • মুক্তিযুদ্ধে বাংলা সাহিত্য
  • বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ, সুপ্রিম কোর্ট (গঠন,ক্ষমতা,কার্যাবলী)
  • বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী(পদমর্যাদা,ক্ষমতা,কার্যাবলী)
(আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর সাথে কমন টপিক )
  • বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি
  • বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক
  • বাংলাদেশ মিয়ানমার সম্পর্ক
  • বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মুক্তবাজার অর্থনীতি ও বিশ্বায়ন
  • MDG ও বাংলাদেশের সাফল্য ব্যর্থতা
  • SAPTA,TICFA,GSP ও বাংলাদেশ
  • IMF, WB, ADB, IsDB ,বৈদেশিক ঋণ ও সাহায্য এবং বাংলাদেশ
  • ইত্যাদি
উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হচ্ছে উপরের টপিকগুলোর উপর খুব ভালভাবে প্রস্তুতি নেয়া হলে বাংলা ২য় পত্র ও ইংরেজি ২য় পত্রে যে ৪টি রচনা/প্রবন্ধ আসে তার জন্য বিশেষ কোন কিছু পড়ার প্রয়োজন নেই।

২য় ভাগঃ

৩৩ তম বিসিএস অফিসিয়ালি কিংবা কাগজে কলমে সাধারণ বিসিএস হলেও মূলত একটি ব্যতিক্রম কিংবা অসাধারণ (স্পেশাল) বিসিএস ছিল, অধিক সংখ্যক ডাক্তার নেয়ার কারণে প্রশ্নের প্যাটার্নে কিছুটা পরিবর্তন এসেছিল, যার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ২য় পত্রে সংবিধান থেকে বাধ্যতামূলক কোন প্রশ্ন ছিল না, তাই বলে ৩৪ তম প্রার্থীদের নিশ্চিন্ত থাকার কোন উপায় নেই, কারণ এবার সংবিধান থেকে প্রশ্ন হয়ার চ্যান্স ভালই, যেহেতু সময় স্বল্পতার কারণে পুরো সংবিধান পড়া বাস্তবসম্মত নয়, তাই কিছু সেলেক্টেড টপিক পড়া যেতে পারে যেগুলো বিগত বিসিএসগুলোতে ঘুরিয়ে ফিরেয়ে এসেছিল

অনুচ্ছেদসমূহঃ


২ক*,৪*,৪ক*,৬,৭*,৭ক,৭খ,৮*,১০,১১,১২*,১৪,১৫,১৭*,১৮ক,২২*,২৩,২৩ক,২৫*,২৭,২৮*,৩৩, ৪১*,৪২*,৪৯,৫১,৫২*,৫৫,৫৬,৫৯*,৬৪,৬৬*,৭০*,৭৬,৭৭*,৮১*, ৮৪*,৯১*,৯৪,১০৮*,১১৭*,১১৮,১১৯,১২২*,১২৭,১৩৭,১৪১ক*, ১৪১খ, ১৪১ গ,১৪৫,১৪৮ (তারকা খচিতগুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ )

সংবিধান থেকে হুবহু উত্তর লিখতে পারা উত্তম তবে মর্ম ঠিক রেখে ও লিখলেও চলবে, উত্তর লেখার সময় খেয়াল রাখা উচিত কোনভাবেই যেন উপনুচ্ছেদগুলোর ক্রম ওলট পালট না হয়, কিংবা বেশি বানিয়ে লিখতে গিয়ে মর্ম পরিবর্তিত না হয়ে যায়, এতে পুরো সংবিধানই পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে, যা শুধু পরীক্ষার জন্য অমঙ্গলজনকই নয় বরং এটা বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধও বটে!  :P

৩য় ভাগঃ

এই লেখার শুরুতেই আমি বলেছিলাম যে, আমাদের উচিত বিগত বিসিএসগুলোর প্রশ্নের ট্রেন্ড ভালভাবে অনুধাবন করা, ৩৩তম বিসিএসের বাংলাদেশ বিষয়াবলী প্রশ্ন (বিশেষ করে ২য় পত্র) থেকে একটি শিক্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে যে, তুলনামূলক বেশি পরীক্ষার্থী থাকার কারণে বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নের চেয়ে তথ্যমূলক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল, ৩৪ তম তে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি তাই এক্ষেত্রেও এমন ঘটা অস্বাভাবিক কিছুই না, কারণ ৪৬ হাজার পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র মূল্যায়ন চাট্টেখানি কথা নয়;
কাজেই সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন পড়ে যাওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে বলে মনে করি, এখন প্রশ্ন হচ্ছে কোথা থেকে পড়ব? কী পড়ব?
৩৩ তমতে বাংলাদেশ বিষয়াবলীর প্রশ্ন দেখে আমি কিছুটা অবাক হয়েছিলাম কারণ পুরো প্রশ্নটাই “নতুন বিশ্ব” থেকে কপি পেস্ট করা হয়েছিল, কারো সন্দেহ থাকলে এখনই মিলিয়ে নিতে পারেন, এবং মজার ব্যাপার হচ্ছে এত সহজ প্রশ্নের উত্তর লিখতে গিয়েও অনেক পরীক্ষার্থী কনফিডেন্সের সাথে ভুল করে এসেছেন, যেমন “ কোন মুসলিম সর্বপ্রথম সমগ্র বাংলাদেশের অধিপতি হন?, সর্বদলীয় কেন্দ্রিয় রাষ্ট্রভাষা পরিষদ কবে গঠিত হয়? কবে কোথায় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠার শপথ নেয়া হয় ? ইত্যাদি সহজ প্রশ্নের উত্তর আমার সামনেই অনেক মহাজ্ঞানী(!) পন্ডিতগণ কনফিডেন্সের সহিত ভুল লিখেছিল , সহজ জিনিস ও অনেক সময় একদম সহজ নয়;
কাজেই এজাতীয় সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের জন্য প্রস্তুতি সবার নেয়া উচিত, এজন্য নতুন বিশ্ব/আজকের বিশ্ব পড়তে পারেন, নতুন বিশ্বও পুরোটা পড়ার সময় নেই কাজেই এখান থেকেও সেলেক্টেড টপিক/চ্যাপ্টার পড়া ভাল;
যেমন বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি,অবস্থান, আয়তন ও সীমা, জলবায়ু, জনসংখ্যা, উপজাতি, বাংলাদেশের ইতিহাস (প্রাচীন যুগ থেকে স্বাধীনতা),বঙ্গোপসাগর, সমুদ্র সইকত, নদ নদী থেকে বাংলাদেশের কৃষিজ সম্পদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ, বাংলাদেশের সংবিধান, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ,বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা, ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান ইত্যাদি ।      
এজাতীয় সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর কেমন হবে তা নিয়ে অনেক মতদ্বৈততা থাকলেও ঝুকিমুক্তভাবে এমনভাবে উত্তর লিখা উচিত যাতে সাপে মড়ে লাঠিও না ভাঙে, মানে প্রথমেই উত্তরটি লিখে পরে সময় থাকা সাপেক্ষে বিস্তারিত বিবরণ দেয়া উচিত, সবার মনে রাখা উচিত , পরীক্ষায় ৩ ঘন্টা সময় এমনিই দেয়া হয় না । 
21.02.2014

বাংলাঃ

১ম পত্রঃ

মনোযোগ সহকারে পরিশ্রম করলে এবং পরীক্ষায় নির্ভুল ভাষাশৈলী ব্যবহারের মাধ্যমে এই সাবজেক্টেও নম্বর তোলার সুযোগ অনেক বেশি, প্রশ্ন অনুসারে ভাগ করে আলোচনা করলে ব্যাপারটা অনেক বেশি পরিষ্কার হয়ে যাবে;
ব্যাকরণে ৩০ নম্বর থাকে সতর্কতার সহিত নির্ভুলভাবে লিখলে যার মধ্যে ৩০ নম্বরই তোলা সম্ভব,
১(ক)->  শুদ্ধি-অশুদ্ধি ভালোভাবে শিখতে হলে দীর্ঘদিনের অনুশীলন দরকার যেহেতু এখন সময় অনেক কম তাই ড. সৌমিত্র শেখরের বাংলা দর্পণ ও জিজ্ঞাসা এই দুটি বই মিলিয়ে প্রায় ১০-১২ পৃষ্ঠা শুদ্ধি-অশুদ্ধি ভালোভাবে দেখে যাওয়া উচিত, বিগত কয়েক বছর যাবত ঐ ভদ্রলোক বিসিএস এর অন্যতম প্রশ্নকর্তা, তাই তাঁর বই থেকে অনেক কিছু হুবুহু কমনও পাওয়া যেতে পারে;

(খ) শুন্যস্থান পূরণ মূলত বুদ্ধিমত্তা নির্ণায়ক একটি প্রশ্ন, প্রায় ষোল বছর পড়াশোনা করার পর এই প্রশ্নের উত্তর দিতে কারো সমস্যা থাকার কথা নয়, তারপর ও এই স্বল্প সময়ে একটু ধারণা নেয়ার জন্য দর্পণ বইটি পড়া যেতে পারে , এছাড়াও বিগত বছরের প্রশ্ন থেকেও ধারণা পাওয়া যাবে, বিগত কয়েক বছর কিছুটা প্রচলিত শব্দের শূন্যস্থান আসতে দেখা যাচ্ছে তবে আগে এই পার্টে বাগধারা ভিত্তিক শূন্যস্থান থাকত,তাই সময় থাকলে বাগধারা পড়ে যাওয়াটাও অবশ্যকাম্য; (গ) ছয়টি পূর্ণ বাক্যে নিহিতার্থ লিখতে গিয়ে অনেকেই এটাকে ভাবসম্প্রসারণ টাইপ কিছু একটা ভেবে গুলিয়ে ফেলে, মূলত প্রশ্নে দেয়া পঙক্তি দ্বারা কি বোঝানো হয় সেটাই লিখতে হবে অনেকটা ভাবসম্প্রসারণের “মূলভাব” এর মত, শেষ ২-১ লাইনে একটা দৃষ্টান্ত বা উদাহরণ দেয়া যেতে পারে;

(ঘ) বাক্যরচনা নিয়ে কিছু বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না, নির্ভুলভাবে প্রদত্ত শব্দ অবিকৃত রেখে যে কোন বাক্যে তার ব্যবহার দেখাতে পারলেই হল, সরল বাক্য ব্যবহার করা উত্তম , বিগত কয়েক বছরে সাধারণ শব্দ আসলেও আগে এই পার্টে পারিভাষিক শব্দযোগে বাক্যরচনা আসত, তাই দর্পণ বই থেকে পারিভাষিক শব্দগুলো দেখে নিতে পারেন;

(ঙ) একটু অনুশীলন করলে এই পার্টটা খুবই সহজ, এক্ষেত্রেও দর্পণ ও জিজ্ঞাসা বই দুটো দেখে যেতে পারেন;
২.ভাবসম্প্রসারণঃ যেহেতু অনধিক ২০ বাক্যে লিখতে হবে তাই ভাষাশৈলীর দিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া উচিত, প্রচলিত ধারার কমন প্রশ্নই পরীক্ষায় এসে থাকে তাই ঘাবড়ানোর কিছু নেই, দর্পণ বই থেকে ভাবসম্প্রসারণের গঠনগত দিক গুলো দেখা যেতে পারে;

৩. সারমর্ম ও সারাংশ দুটির উত্তরই দিতে হবে, যত সংক্ষিপ্ত আকারে লেখা যায় ততই উত্তম, অনেকেই প্রশ্ন ঠিকভাবে না পড়ে এমন কিছু লিখে যা মূল বিষয়বস্তু থেকে বিচ্যুত কিংবা বিকৃত হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে কোন নম্বর না পাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে, তাই এই পার্টে উত্তর করার আগে গভীর মনোযোগ দিয়ে প্রশ্নটা পড়া উচিত;

৪. অনেকেই এই পার্টটি নিয়ে মহা দুশ্চিন্তায় দিনানিপাত করছেন, অন্যান্য ভাষার তুলনায় বাংলা ভাষার জন্ম খুব বেশিদিন না হলেও, আমাদের কবি সাহিত্যিকরা অগণিত সাহিত্যকর্ম করে গেছেন, যার নিদারুণ ফল ভোগ করতে হচ্ছে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের :P
যাই হোক কাজের কথায় আসি, যেহেতু সময় অনেক কম তাই, শুধুমাত্র সিলেবাসের টপিকগুলো পড়তে পারেন , এক্ষেত্রে দর্পণ বইটির পাশাপাশি জিজ্ঞাসা বই থেকে পড়া যেতে পারে, আধুনিক সাহিত্যের জন্য কেবল মাত্র দর্পণ পড়তে পারেন (যেহেতু সময় খুবই কম);
উত্তর করার সময় একটা ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে তা হল, শুধুমাত্র একটি দুটি বাক্যে উত্তর না দিয়ে প্রথমে সংক্ষিপ্ত আকারে উত্তর লিখে পরে বিবরণ দেয়া উচিত, যেমন গত বিসিএস এ একটা প্রশ্ন ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত তিনটি ছোটগল্পের নাম লিখুন, এক্ষেত্রে উত্তর লিখতে গিয়ে প্রথমে তিনটি নাম লিখে ঐ তিনটি গল্প থেকে কিছু বিবরণ দেয়া যেতে পারে, ২-১ টি চরিত্রের নাম জানা থাকলে তাও লেখা যেতে পারে, ২ মার্কের জন্য ১-২ পৃষ্ঠা লিখলেও কোন ক্ষতি নেই, আর এই পরীক্ষায় সময়ও পাওয়া যায় বেশ ভালই;
পুরো উত্তরপত্রে নির্ভুল বানান ও পরিচ্ছন্ন হাতের লেখার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া উচিত





*** চলবে.........
(Collected)