Thursday, September 27, 2012

The Daily Ittefaq | রোহিঙ্গা নিয়ে যত মত | News


রোহিঙ্গা নিয়ে যত মত

বৃহস্পতিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১২, ১২ আশ্বিন ১৪১৯
রোহিঙ্গাএমন একটি ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী, যারা নিজদেশেও পরবাসী! পরবাসেও আশ্রয়দাতার গলার কাঁটাশরণার্থী হয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন অংশে তারা আশ্রয় খুঁজছে বেশ কয়েক দশক ধরে। সাম্প্রতিক সহিংসতায় রোহিঙ্গারা দিশেহারা হয়ে জন্মভূমি মিয়ানমার ছেড়ে আশ্রয় খুঁজতে জড়ো হচ্ছে প্রতিবেশী দেশগুলোর সীমান্তে
মায়ানমারের আরাকান রাজ্যের মুসলিম সংস্কৃতি ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক-বাহক হিসেবে রোহিঙ্গাদের ভূমিকা ছিল প্রধান। রোহিঙ্গাদের উদ্ভব বিকাশ আলোচনায় বহুমুখী বিতর্ক মতামত রয়েছে। অনেকে মনে করেন—‘রহম শব্দ থেকেই রোহিঙ্গা নামের উত্পত্তি। অর্থাত্ অষ্টম শতাব্দীতে আরাকানে চন্দ্রবংশীয় রাজাদের শাসনামলে বৈশালী ছিল তাদের রাজধানী। সে সময় চন্দ্রবংশীয় রাজা মহত্-ইঙ্গ-চন্দ্রের রাজত্বকালে (৭৮৮৮১০ খ্রি.) কয়েকটি আরব মুসলিম বাণিজ্য তরী রামব্রী দ্বীপের পাশে বিধ্বস্ত হলে জাহাজের আরোহীরা রহম, রহম’  (দয়া করো, দয়া করো) বলে চিত্কার করেন। সময় স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে আরাকানের রাজার কাছে নিয়ে যান। আরাকানরাজ তাদের বুদ্ধিমত্তা উন্নত আচরণে মুগ্ধ হয়ে আরাকানে স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপনের অনুমতি দেন। আরবি ভাষায় অনভিজ্ঞ স্থানীয় লোকজন তাদের রহম গোত্রের লোক মনে করে রহম বলেই ডাকত। ক্রমশ শব্দটি বিকৃত হয়ে রহম>রোঁয়াই>রোয়াই>রোয়াইঙ্গা বা রোহিঙ্গা হয়ে যায়। কোনো কোনো ঐতিহাসিকের মতেরোহিঙ্গারা আফগানিস্তানের অন্তর্গত ঘোর প্রদেশের রোহা জেলার অধিবাসীদের বংশধর। মূলত তারা তুির্ক কিংবা আফগানি। কারণ, ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বখতিয়ার খিলজিসহ বাংলার মুসলমান বিজেতা শাসকরা ইসলাম প্রচার প্রসারে আফগানিস্তানের রোহার অঞ্চলের কিছু ব্যক্তিকে আরাকানে পাঠিয়েছিলেন। রোহার অঞ্চলের ওই মুসলমানরা আরাকানের নামকরণ করেছিলেন রোহাং। এই রোহা রোহাং শব্দ থেকেই রোহিঙ্গা নামকরণ হয়েছে
অন্য মতে—‘রাখাইং শব্দ থেকে রোহিঙ্গা উত্পত্তি হয়েছে। এই মতে রাখাইং শব্দ থেকে রোয়াং হয়েছে এবং রোয়াং শব্দটি বিকৃত হয়ে রোয়াইঙ্গা হয়েছে
কেউ কেউ মনে করেন—‘রোয়াং তিব্বতি বর্মি শব্দ। অর্থ আরাকান। এই মতে রোয়াং শব্দের অপভ্রংশ রোহিঙ্গা কেউ আবার মনে করেন—‘রোহিঙ্গা হলো রেঙ্গুন শব্দের অপভ্রংশ। সেই মতে রেঙ্গুনে বসবাসকারী অবার্মিজ সম্প্র্রদায় রোহিঙ্গা নামে পরিচিতি পায়
মিয়ানমার অবশ্য রোহিঙ্গা নামে কোনো জনগোষ্ঠীকে স্বীকার করে না। এর কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয় ১৯৮২ সালের একটি আইনের সীমাবদ্ধতা। আইনটিতে বলা হয়েছেপ্রথম ব্রিটিশ-বার্মিজ যুদ্ধের আগে যেসব গোষ্ঠী মিয়ানমারে বসবাস করেছে, তারাই শুধু নাগরিকত্বের উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে। ১৮২৪ থেকে ১৮২৬ সাল পর্যন্ত এই যুদ্ধ হয়। সে কারণে মিয়ানমারের কাছে রোহিঙ্গা নামে কোনো জাতি নেই। তাদের মতেরোহিঙ্গারা মুসলিম সম্প্রদায়ের বহিরাগত অংশ। এরা বাংলাদেশের মানুষবিভিন্ন সময় কাজের সন্ধানে মিয়ানমারে প্রবেশ করে বসতি স্থাপন করেছিল মাত্র
রোহিঙ্গা শরণার্থী নাসিরুদ্দিন বলেন, আমরা মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী আরাকানের বাসিন্দা? কিন্তু মিয়ানমার সরকার আমাদের নাগরিকত্ব দেয়নি? Avgiv ভারতীয় বংশোদ্ভূত?উনবিংশ শতাব্দীতে ইংরেজরা বেগার শ্রমিক হিসেবে আমাদের পূর্বপুরুষদের আরাকানে পাঠায়? নানাভাবে নির্যাতিত হয়ে আমরা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছি|

No comments:

Post a Comment

Thanks for visiting.