প্রস্তাবনাঃ
সুপ্রিয় পরীক্ষার্থীবৃন্দ,
ক। মূল বিষয় আলোচনা করার আগে বিসিএস পরীক্ষার ঠিক একমাস আগে অর্থাৎ এরকম সময়ে আমার যে অনুভূতি হত তা কিছুটা আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করে নিই।চলতি বাংলায় যাকে বলে “বিশাল গাড্ডায় পড়া”- আমার অনুভূতি ছিল ঠিক এরকম।গাড্ডা শব্দটির অর্থ আমি জানিনা,সম্ভবত সমুদ্র বা এরকম কিছু।বিসিএস পরীক্ষার সিলেবাসের সাথে আটলান্টিক মহাসাগরের তুলনা করলে যে খুব ভুল কিছু হবেনা তা আমার মত “ভুক্তভোগী” মাত্রই স্বীকার করবেন।আর পরীক্ষার একমাস আগে এই আটলান্টিকের গভীরতা বেশির চাইতেও বেশি হয়ে প্রায় সব পরীক্ষার্থীর চোখেই ধরা দেয়।প্রতিদিন পড়তে বসতাম, এক-দুটি বিষয়(topic)এর পেছনে কয়েক ঘন্টা ব্যয় করতাম,তারপর সেগুলো মনে করার চেষ্টা করে দেখতাম অধিকাংশই ভুলে গিয়েছি।দিনশেষে ঘুমাতে যাবার সময় মনে হত-হায় হায়,আরো একটা দিন শেষ হয়ে গেল,কিছুই তো পড়া হলনা!
খ। প্রিয় পাঠক,আপনার যদি এরকম কিছু হয়ে থাকে তাহলে বলব প্লিজ হতাশ হবেন না।উইন্সটন চার্চিল বলেছিলেন- “ If you are going through hell, get going!”
আপনাদেরকেও একজন সহযাত্রী হিসেবে বলি,এত ভয়ঙ্কর পরিশ্রম যখন করেছেন,এই তো আর মাত্র কটা দিন,করুন না আরেকটু কষ্ট!যা পড়বেন তার হুবহু মনে থাকবে এমনটি কখনোই হবেনা।যেটি হবে,এই এখান থেকে একটু ওখান থেকে আরেকটু এরকম করে দীর্ঘদিন প্রস্তুতি নিতে নিতে আপনার অজান্তেই চমৎকার একটা ভিত্তিমূল বা Basic তৈরি হবে।পরীক্ষার হলে দেখবেন এই বেসিকটা আপনাকে খুব ভালোভাবেই বৈতরণী পার হতে সহায়তা করছে।
গ। শিব খেরার “You Can Win” বইটিতে এ ব্যাপারে একটি মজার উদাহরণ পড়েছিলাম।প্রাচীনকালে যখন আধুনিক যন্ত্রপাতি ছিলোনা,মানুষ তখন কুড়াল দিয়ে আঘাত করে পাথর কাটতো।দেখা যেত,একজন মানুষ পাথরের বিশাল একটি টুকরোর উপরে ঘন্টার পর ঘন্টা কুড়াল দিয়ে আঘাত করেই যাচ্ছে,পাথরের টুকরার কোন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছেনা।এভাবে এক-দুইশ বার আঘাত করার পর হঠাৎ দেখা যেত একশতম আঘাতের সাথে সাথে পাথরের টুকরাটি দ্বিখণ্ডিত হয়ে পড়েছে।আমরা বাইরে থেকে দেখছি যে একশতম আঘাতের ফলেই পাথরটি দুটুকরো হল-কিন্তু আসলেই কি তাই? প্রথম থেকে শুরু করে প্রতিটি আঘাত পাথরটিকে দুর্বল করেছে,তারপর সর্বশেষ আঘাত সেটিকে দ্বিখণ্ডিত করেছে।
ঘ। আমার মনে হয় এই একমাস আগে আমাদের অনেকের অবস্থাই এরকম-প্রচুর পড়াশোনা করছি কিন্তু টেরই পাচ্ছিনা আদৌ কোন উন্নতি হচ্ছে কিনা।প্রিয় পরীক্ষার্থী, বিশ্বাস করুন- আপনি নিজে বুঝতে না পারলেও এই ঘন্টার পর ঘন্টা পরিশ্রম প্রতিদিন আপনাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে।হতাশা ঝেড়ে ফেলুন, মাথায় যে চিন্তাই আসুক না কেন নিজেকে পরিশ্রমের নতুন পর্যায়ে উন্নীত করুন। বলা তো যায়না,হয়তো দেখা যাবে নিজের অজান্তেই আপনি পছন্দের ক্যাডারের প্রথম স্থান দখল করে বসে আছেন!
পুনশ্চঃ ১)এখানে “দীর্ঘদিন” বলতে প্রিলি থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত সময় বুঝিয়েছি।এ কদিন আপনি যদি শুধু দিনে ৫-১০ মিনিট খবরও দেখে থাকেন বা পত্রিকা পড়েন,এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জিনিসগুলোও নিশ্চিতভাবে আপনার বেসিক তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে।কাজেই, “হায় হায়,আমি তো দীর্ঘদিন প্রস্তুতি নেইনি”-এমনটি ভেবে আফসোস করা থেকে বিরত থাকুন!
২) শুরু করার আগে আমার আগের আর্টিকেলগুলোর মত এখানেও বলে নিই-আমি এখানে শুধুমাত্র নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করছি,আপনাদের কাউকে জ্ঞান দেবার মত ধৃষ্টতা আমার নেই।আমার কোন পরামর্শ আপনি যদি অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করেন তাহলে নির্দ্বিধায় তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন।এটা কোন স্কুল কলেজ নয় এবং আমিও কারো শিক্ষক নই যে আমার কথা বেদবাক্যের মত অভ্রান্ত হবে।বিসিএস পরীক্ষায় আমার চাইতে অনেক বেশি নম্বর পেয়েছেন এরকম অসংখ্য মানুষ রয়েছেন এবং তাঁদের কেউ কেউ এই গ্রুপেই রয়েছেন।আপনি একজন শিক্ষিত মানুষ,কাজেই প্রস্তুতির ব্যাপারে আপনার নিজস্ব সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত।
প্রসংগ-সংবিধান
কেন সংবিধানের পেছনে অতিরিক্ত সময় দেবেনঃ
১)বাকি আর্টিকেলগুলো লেখার সময় আমি মোটামুটি নির্দিষ্ট একটি কাঠামোতে প্রস্তুতি নেবার ব্যাপারে আলোচনা করেছি এবং নম্বর বন্টন অনুযায়ী বর্ণনা দিয়েছি।বাংলাদেশ বিষয়াবলীর ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে,সিলেবাস এতটাই বিস্তৃত যে বাংলাদেশের ইতিহাস,ভূগোল,পৌরনীতি,অর্থনীতি,সমাজনীতি ইত্যাদি প্রায় সবকিছুই এখানকার অন্তর্ভুক্ত করে দেয়া হয়েছে।পরীক্ষার মাত্র একমাস আগে এটার সিলেবাস দেখে আমি নিজে মোটামুটি মুর্ছা গিয়েছিলাম,হয়তো আপনাদেরও কেউ কেউ যাচ্ছেন!বাংলাদেশ বিষয়াবলীর ব্যাপারে টপিকভিত্তিক সাজেশন দেবার মত বিশ্লেষণ-ক্ষমতা আমার নেই,তবে এই একমাসে কেউ যদি বলেন যে দুইশত নম্বরের মধ্যে নিশ্চিতভাবে ৫০ নম্বর বা তারও অধিক “কমন” পেতে কোন বিষয়টি ভালোভাবে পড়া উচিত-তাহলে আমি এক কথায় উত্তর দেবো-“সংবিধান”।
২)দুঃখের বিষয়,একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে প্রত্যেক বাংলাদেশীর ক্ষেত্রেই সংবিধান পাঠ আবশ্যক অথচ বিসিএস পরীক্ষা দেবার আগে সংবিধান উলটে দেখার সৌভাগ্য(?) আমার হয়নি।আমাদের দেশটি আসলে কিভাবে চলে এটি বুঝতে সংবিধান পাঠের বিকল্প নেই।আর আগে ওই যে বললাম “বেসিক”,এই “বেসিক” শক্ত করতে সংবিধান পাঠ যে কতটা দরকারী তা বলে বোঝানো যাবেনা।সুনাগরিক হওয়া,দেশকে জানা ইত্যাদি বৃহৎ লক্ষ্যের জন্যে সংবিধান পাঠ আবশ্যক,তবে আমাদের ঠিক নাকের ডগায় যে পরীক্ষাটি উঁকি দিচ্ছে,সেই বিসিএস পরীক্ষায় “বাংলাদেশ বিষয়াবলী” তে ভালো নম্বর তুলতেও সংবিধান পাঠ করা একান্ত জরুরী।
৩)বিগত বছরগুলোর প্রশ্ন বিশ্লেষণ করলে যে কেউ দেখতে পাবেন বাংলাদেশ প্রথম এবং দ্বিতীয়পত্র মিলিয়ে প্রতিবারই ৫০+ নম্বর কম করে হলেও সংবিধান থেকে প্রশ্ন হয়েছে।এছাড়া,সংবিধান থেকে প্রশ্নের উত্তর দিলে ২০ নম্বরের রচনামূলক প্রশ্নে খুব অল্প লিখেও সহজেই ১৫+ নম্বর পাওয়া যায়,যেখানে অন্যান্য প্রশ্নের উত্তরে গাদা গাদা লিখেও আপনি ১২ বা ১৩ এর বেশি পাবেননা।একটা খুব বাস্তব উদাহরণ দিচ্ছিঃ মুসলিম যেসব পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় ইসলামিয়াত পরীক্ষা দিয়েছেন তাঁরা সবাই জানেন যে সুত্র উল্লেকপূর্বক আরবি আয়াত লিখলে প্রায় ৮০-৯০ ভাগ নম্বরও তোলা যায়।বাংলাদেশ বিষয়াবলীর সরাসরি সংবিধান বিষয়ক এমনকি কাছাকাছি কোন প্রশ্নের উত্তরে যদি আপনি বাংলাদেশ সংবিধান থেকে আর্টিকেল নম্বর উল্লেখ করে ভিন্ন রঙের কালিতে(সাধারণত নীল) কোটেশন তুলে দিতে পারেন তাহলে গড়পড়তা নম্বরের চাইতে অবশ্যই বেশি পাবেন।
কিভাবে পড়তে হবেঃ
১)সংবিধান পড়তে গিয়ে প্রথমেই আমার যে সমস্যা হয়েছিলো সেটি হচ্ছে এর প্রায় মাইকেল মধুসূদন দত্তের কাছাকাছি কঠিন ভাষা।মুখস্তবিদ্যায় আমি ভয়াবহ রকমের খারাপ,সংবিধানের এরকম ভাষা লাইন-বাই-লাইন মুখস্ত করা আমার পক্ষে আক্ষরিক অর্থেই অসম্ভব ছিলো।তবে সুখের বিষয়,লাইন-বাই-লাইন সংবিধান মুখস্ত করবার কোন দরকার নেই।আপনি সংবিধানের আর্টিকেলগুলো পড়বেন,বুঝতে চেষ্টা করবেন এতে কি বলা হয়েছে এবং এরপর সম্পূর্ণ নিজের ভাষায় লিখবেন।
২)আগেই বলেছি যে সংবিধান লাইন বাই লাইন মুখস্ত করবার দরকার নেই,তবে একটি জিনিস করতে পারলে সবচাইতে ভালো হয়ঃ সংবিধানে যে ১৫৩টি আর্টিকেল রয়েছে তাদের নাম মুখস্ত করে ফেলা।যেমনঃ আর্টিকেল ১ এর শিরোনাম হচ্ছে “প্রজাতন্ত্র”,আর্টিকেল ৫ এর শিরোনাম “রাজধানী” ইত্যাদি।১৫৩টি আর্টিকেলের নাম যদি মুখস্ত করতে পারেন(এটা এই ১ মাসেও খুব সম্ভব-এর পেছনে যে সময় আপনি ব্যয় করবেন তার এক সেকেন্ডও বৃথা যাবেনা) তাহলে সংবিধানটি ৪-৫ বার ভালোভাবে পড়লেই যেখান থেকেই প্রশ্ন আসুক না কেন নিজের ভাষায় লিখতে পারবেন।
৩)সংবিধান থেকে প্রতিবার কিছু গৎবাধা প্রশ্ন আসে-এগুলো বিগত বিসিএসের প্রশ্ন দেখলেই বুঝতে পারবেন।এধরণের গৎবাধা প্রশ্নের মধ্যে রয়েছেঃ
ক)সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রের মূলনীতি ব্যাখ্যা করুন
খ)সংবিধান অনুসারে আমাদের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে আলোকপাত করুন
গ) সংবিধানের এ পর্যন্ত যতগুলো সংশোধনী হয়েছে তাদের সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করুন
ঘ) বাংলাদেশের সংবিধান রচনার পটভূমি ও ইতিহাস বর্ণনা করুন
ঙ) বাংলাদেশ সংবিধানের আলোকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আলোচনা করুন ইত্যাদি।
এছাড়া একটু “আনকমন” প্রশ্ন হিসেবে মাঝে মাঝে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী, অর্থবিল, মন্ত্রীসভা ইত্যাদি এসে থাকে।
৪)টীকা হিসেবে সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন আর্টিকেলের শিরোনাম থেকে ২৮তম বিসিএসে সরাসরি ২০ নম্বর এসেছিলো।১০ টি শিরোনাম সম্পর্কে অল্প একটু সঠিক বর্ণনা যারা দিয়েছেন তারা একেবারে অঙ্কের মত নম্বর পেয়েছেন।প্রতিবারই সংবিধানের আর্টিকেল থেকে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন/টীকা থাকে,তাই সব না হলেও অন্তত পূর্ববর্তী বছরে এসেছে এগুলো এবং গুরুত্বপূর্ন মনে হয় এমন আর্টিকেলগুলোর শিরোনাম,আর্টিকেল নম্বর এবং ভেতরে কি আছে মোটামুটি নিজের ভাষায় লেখার মত প্রস্তুতি থাকাটা খুব জরুরী।
৫)৩১তম বিসিএস পরীক্ষায় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী,পঞ্চম সংশোধনী বাতিলকরণ এবং বাহাত্তরের সংবিধানের সাথে বর্তমান সংবিধান সম্পর্কিত তুলনা-এ বিষয়গুলো থেকে প্রশ্ন আসার প্রচ্ছন্ন সম্ভাবনা রয়েছে।গুগলে সার্চ দিলে বাংলা-ইংরেজি মিলিয়ে এ সম্পর্কিত গোটাবিশেক প্রবন্ধ পেয়ে যাবেন,আর বাজারের বিভিন্ন নোটবই তো আছেই।তবে এমন কোন আর্টিকেল থেকে নিজের উত্তর তৈরি করবেন না যার মূলসুর বর্তমান সরকারের নীতিমালার সরাসরি বিরোধিতা করে।সরকারী চাকুরিপ্রার্থী হিসেবে এটি আপনার সীমাবদ্ধতা;সরকারের নীতিমালার সমালোচনা অন্ততঃ এই পর্যায়ে পরীক্ষার খাতায় আপনি করতে পারবেননা।বাজারের নোটবই থেকে উত্তর তৈরি করার ক্ষেত্রে ভাষাটি যেন আপনার নিজের হয়-এদিকে নজর দেবেন।বাজারের নোটবই থেকে তথ্য নিলেও তা থেকে হুবহু মুখস্ত করাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবেনা,কেননা সেক্ষেত্রে পরীক্ষক একই রকম উত্তর ১০০টা খাতায় দেখলে বিরক্ত হয়ে নম্বর কমিয়ে দেবেন।
৬)আপনার যদি মনে হয় পরীক্ষার মাত্র একমাস আগে সংবিধান নিয়ে মাতামাতি করাটা বোকামি,সেক্ষেত্রে আবারও বলব আরেকবার ভেবে দেখতে।বাংলাদেশ বিষয়াবলীতে আপনি অন্যান্য ১০০টা টপিক পড়েও প্রশ্ন “কমন” না পেতে পারেন,কিন্তু সংবিধান ছাড়া বাংলাদেশ বিষয়াবলীর প্রশ্ন হয়েছে এরকম নজির একবারও পাবেননা।এটাকে “পাগলামি” ভেবে অনেকেই সংবিধান ভালোভাবে পড়বেননা,কিন্তু যারা পড়বেন- তাদের পুরোপুরি “পয়সা উশুল” হবার সম্ভাবনা, যদি না প্রশ্নে বৈপ্লবিক কোন পরিবর্তন ঘটে।
সবশেষে বলি, এই একমাস হচ্ছে রেসের শেষ ধাপ।আপনার যতই হতাশা আসুক,এই একমাসের সংবিধান সম্পর্কিত পড়াশোনা আপনাকে বেশ কিছুটা হলেও এগিয়ে দেবে।প্রতিদিন আধাঘন্টা থেকে পঁয়তাল্লিশ মিনিট সংবিধানের জন্যে বরাদ্দ রাখুন,হয়ত এই সামান্য এগিয়ে থাকাটাই আপনার স্বপ্নপূরণের চাবিকাঠি হয়ে দেখা দিতে পারে!
পুনঃ-পুনশ্চঃ ১)সংবিধান সম্পর্কিত বেশ কিছু ভালো ভালো টেক্সটবই বাজারে আছে।আমি পড়েছিলাম আবদুল হালিমের “Constitution,Constitutional Law And Politics: Bangladesh Perspective” বইটি।সিসিবি প্রকাশনীর এই বইটির বাংলা এবং ইংরেজি দুটি সংস্করণই নীলক্ষেতে পাওয়া যায়।মূল সংবিধানের পাশাপাশি এই বইটি পড়লে সংবিধান সম্পর্কিত প্রশ্নগুলো ভালোভাবে উত্তর দেয়া সম্ভব বলে আমি মনে করি।তবে এই বইটিই যে পড়তে হবে এমন কোন কথা নেই-আপনার পছন্দের যে কোন টেক্সটবই আপনি পড়তে পারেন।এছাড়া আপনি যদি আত্মবিশ্বাসী থাকেন,তাহলে সহায়ক কোন বই দরকার নেই-নিজে নিজেই সংবিধান পড়ে তা থেকেও উত্তর করতে পারেন।
২) এ লেখাটি সহ আমার যে কোন লেখার ভুলত্রুটি অন্বেষণ/সমালোচনা সাদরে আমন্ত্রিত।এছাড়া বিষয় সম্পর্কিত বা বিসিএস পরীক্ষার ব্যাপারে কোন প্রশ্ন থাকলে আমাকে ফেসবুকে সরাসরি ইমেইল করতে পারেন-আমার সাধ্যমত চেষ্টা করব উত্তর দেবার জন্যে।
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আপনার করনীয়ঃ
১। প্রথমেই সংবিধান প্রনয়ন সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য মনে রাখুন যেমন-কবে সংবিধান প্রনয়ন কমিটি গঠন করা হয়, কতজন সদস্য ছিলেন, একমাত্র মহিলা সদস্যের নাম, তখনকার আইনমন্ত্রী এবং সংবিধান প্রনয়ন কমিটির সভাপতি, কতটি মীটিং করেছিলেন তারা, কতদিন লেগেছিল সংবিধান প্রনয়ন করতে, কবে এটি কার্যকর হয়, কে এতে সাক্ষর করেন নি ইত্যাদি। এই তথ্য গুলো আপনি রচনামূলক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে ব্যবহার করতে পারবেন।
২। এরপর জেনে নিন সংবিধানের ভাগ গুলো এবং এই ভাগের মধ্যকার অনুচ্ছেদ গুলো। যেমন-
প্রথম ভাগ- প্রজাতন্ত্র (অনুচ্ছেদ- ১ থেকে ৭)
দ্বিতীয় ভাগ- রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি (অনুচ্ছেদ- ৮ থেকে ২৫)
এইভাবে আপনি ১১টি ভাগের অনুচ্ছেদগুলো মনে রাখুন। এই তথ্য গুলো আপনাকে অনেক সাহায্য করবে। কোন কারনে যদি ভুলে যান, সংবিধানের কোন অনুচ্ছেদ এ কি আছে তখন কমপক্ষে ধারনা করতে পারবেন কোন ভাগে এটি পড়েছে।
৩। এরপর প্রত্যেক অনুচ্ছেদ এর শিরোনাম গুলো মুখস্ত করুন।
৪। এরপর অনুচ্ছেদ গুলো ভালভাবে পড়ুন। বার বার পড়ুন। কোন বন্ধুর সাথে আলাপ করুন “বলতো আইনের দৃষ্টিতে সমতা এটি কোন অনুচ্ছেদ এ আছে?” প্রথম বার না পারলেও সমস্যা নেই। আস্তে আস্তে দেখবেন আপনি ঠিকই বলতে পারছেন।
৫। নিজে নিজে একাকী মনে করার চেষ্টা করুন কোন অনুচ্ছেদ এ কি আছে। ভুলে গেলে ভাববেন না সব শেষ। বরং চিন্তা করবেন আরো ভালো ভাবে পড়তে হবে!! সব সময় হাতের কাছে পকেট এডিশনের সংবিধান সাথে রাখুন। গল্পের বই (!!!!!!) মনে করে পড়ুন।।
কী পড়তে হবে- এই বিষয়ে অনেক কিছু বললাম। এই বার আসি মূল আলোচনায়।
আমি হুবহু মুখস্ত করার জন্য প্রথমেই বলব প্রস্তাবনাটাকে। কারন এই প্রস্তাবনা অনেক বার সংশোধিত হয়েছে। আবার, সংবিধান নিয়ে প্রশ্ন আসলে চেষ্টা করবেন ভূমিকা হিসেবে কোটেশন আকারে এটি ব্যবহার করতে। যেহেতু মুখস্ত করেছেন সেহেতু কোটেশন হিসেবে দেয়ার সময় অবশ্যই নীল রঙের কালি ব্যবহার করবেন। পরীক্ষক কে বুঝান যে সংবিধান টা আপনি পড়েছেন বেশ ভালো (!!!) করে।
তো চলুন মুখস্ত করে ফেলি- “আমরা, বাংলাদেশের জনগন, ১৯৭১ খ্রীস্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষনা করিয়া জাতীয় মুক্তির (স্বাধীনতা) জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রামের (যুদ্ধের) মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি”
[আগ্রহী পাঠকগন হয়ত খেয়াল করবেন আমি বন্ধনীর মধ্যে ২টি শব্দ ব্যবহার করেছি। কারন সংবিধান সংশোধন করে এই শব্দ গুলো একবার যোগ হয়েছে ও একবার প্রতিস্থাপিত হয়েছে]
আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগনকে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের (স্বাধীনতার) জন্য যুদ্ধে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রানোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল সর্বশক্তিমান আল্লাহের উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্র অর্থাৎ অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুবিচারের সেই সকল আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হইবে। [আমার কাছে এই মুহূর্তে ১৫তম সংশোধনীর পরের সংবিধান টা নাই বলে আগ্রহী পাঠকরা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অনুসারে এটা ঠিক করে নিবেন। এই রকম হবার কথা- জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা-সেই সকল আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হইবে।]
সংবিধানের ১১টি ভাগ মনে রাখার উপায়ঃ
প্র রা মৌ নি আ বি নি ম বাং জ সং বি
আসুন, মিলিয়ে নেই-
১। প্র- প্রজাতন্ত্র
২। রা-রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি
৩। মৌ- মৌলিক অধিকার
৪। নি- নির্বাহী বিভাগ
৫। আ- আইন সভা
৬। বি- বিচার বিভাগ
৭। নি- নির্বাচন
৮। ম- মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক
৯। বাং- বাংলাদেশের কর্মবিভাগ
৯ক। জ- জরুরী বিধানাবলী
১০। সং-সংবিধান সংশোধন
১১। বি- বিবিধ
চলুন, এইবার আলাদা ভাবে অনুচ্ছেদ গুলোর দিকে দৃষ্টি দেই।
- অনুচ্ছেদ ১-১২
অনুচ্ছেদ ১-১২ মোটামুটি এমনি মনে থাকে। এই অনুচ্ছেদ গুলোর মধ্যে গুরুত্তপূর্ন অনুচ্ছেদ গুলো হল-
২- প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানা
২ক- রাষ্ট্রধর্ম ( মনে রাখবেন কোন সংশোধনীর মাধ্যমে এটি হয়েছে)
৪ক- প্রতিকৃতি (১৫ তম সংশোধনীতে পরিবর্তন হয়েছে এখানে)
৬- নাগরিকত্ব
৭- সংবিধানের প্রাধান্য
৮- মূলনীতিসমূহ ( সংবিধান সংশোধন হয়েছে এইখানে)
৯- স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান সমূহের উন্নয়ন ( সংবিধান সংশোধন হয়েছে এইখানে)
১০- জাতীয় জীবনে মহিলাদের অংশগ্রহন
১১- গনতন্ত্র
১২- ধর্মনিরপেক্ষতা ( সংবিধান সংশোধন হয়েছে এইখানে)
- অনুচ্ছেদ ১৩-২৫
অনুচ্ছেদ ১৩ থেকে অনুচ্ছেদ ২৫ পর্যন্ত মনে রাখতে আমি এই ছন্দটা মনে রাখতাম।
মালি কৃষককে মৌ গ্রামে নিয়ে গিয়ে অবৈতনিক জনস্বাস্থ্যের জন্য সুযোগের সমতা সৃষ্টি করে। এতে অধিকার ও কর্তব্য রূপে নাগরিকরা নির্বাহী বিভাগ থেকে জাতীয় সংস্কৃতি ও জাতীয় স্মৃতি নিদর্শনের জন্য আন্তর্জাতিক শান্তির অংশীদার হলেন।
চলুন, ছন্দের সাথে অনুচ্ছেদ গুলো মিলেয়ে নেই-
১৩-মালি- মালিকানার নীতি
১৪-কৃষক- কৃষক ও শ্রমিকের মুক্তি
১৫- মৌ- মৌলিক প্রয়োজনের ব্যবস্থা
১৬- গ্রাম- গ্রামীন উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব
১৭- অবৈতনিক- অবৈতনিক ও বাধ্যতা মূলক শিক্ষা
১৮। জনস্বাস্থ্য- জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা
১৯। সুযোগের সমতা- সুযোগের সমতা
২০- অধিকার ও কর্তব্য রূপে- অধিকার ও কর্তব্য রূপে কর্ম
২১- নাগরিক- নাগরিক ও সরকারী কর্মচারীদের কর্তব্য
২২- নির্বাহী বিভাগ থেকে- নির্বাহী বিভাগ হইতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরন
২৩- জাতীয় সংস্কৃতি- জাতীয় সংস্কৃতি
২৪- জাতীয় স্মৃতি নিদর্শন -জাতীয় স্মৃতি নিদর্শন প্রভৃতি
২৫-আন্তর্জাতিক শান্তি- আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সংহতির উন্নয়ন
এইখানে একটি কথা বলতেই হবে। যদি পরীক্ষায় প্রশ্ন আসে, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি গুলো সংবিধানের আলোকে আলোচনা করুন অনেকেই শুধু অনুচ্ছেদ-৮ এর “মূলনীতি সমূহ” দিয়ে আসে। মনে রাখতে হবে দ্বিতীয় ভাগে বর্নিত অনুচ্ছেদ- ৮ থেকে অনুচ্ছেদ-২৫ সব –ই রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি। অনুচ্ছেদ ৮ এ বর্নিত “মূলনীতি সমূহ” আসলে সংবিধানের মূলনীতি যা প্রস্তাবনায় বলা আছে। আরেকটি কথা এখানে বলব ঝেহেতু এই প্রশ্নটির উত্তর অনেক বড় হবে সেহেতু, আপনি অনুচ্ছেদ ৮ এ বর্নিত মূলনীতি সমূহ একটু বেশী আলোচনা করে অন্য অনুচ্ছেদ গুলো শুধু নাম লিখে ১ /২ লাইনের মধ্যে লেখা শেষ করবেন। সময়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। একটি ভালো পারেন দেখে শুধু সেই প্রশ্নের উত্তর অনেক বড় করে দিবেন, সেটা করলে দেখবেন আপনি সব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার মতো পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছেন না। আর যাদের হাতের লেখা একটু স্লো, তাদের তো এটা আরো ভাল করে মনে রাখতে হবে।
অনুচ্ছেদ- ২৬ থেকে ৩১
অনুচ্ছেদ ২৬ থেকে অনুচ্ছেদ ৩১ পর্যন্ত মনে রাখতে আমি এই ছন্দটা মনে রাখতাম।
মৌলিক অধিকার আইনের দৃষ্টিতে ধর্ম , সরকারী নিয়োগ ও বিদেশী খেতাব গ্রহনে সকলের আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার রয়েছে
চলুন, ছন্দের সাথে অনুচ্ছেদ গুলো মিলেয়ে নেই-
২৬-মৌলিক অধিকার- মৌলিক অধিকারের সহিত অসামঞ্জস্য আইন বাতিল
২৭-আইনের দৃষ্টিতে - আইনের দৃষ্টিতে সমতা
২৮- ধর্ম- ধর্ম প্রভৃতি কারনে বৈষম্য
২৯- সরকারী নিয়োগ- সরকারী নিয়োগ লাভে সুযোগের সমতা
৩০- বিদেশী খেতাব গ্রহনে- বিদেশী খেতাব প্রভৃতি গ্রহন নিষিদ্ধকরন
৩১। আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার - আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার
অনুচ্ছেদ- ৩২ থেকে ৩৫
অনুচ্ছেদ ৩২ থেকে অনুচ্ছেদ ৩৫ পর্যন্ত মনে রাখতে আমি এই ছন্দটা মনে রাখতাম।
জীবনে ১বার গ্রেপ্তার হলে জবরদস্তি বিচার হয়
চলুন, ছন্দের সাথে অনুচ্ছেদ গুলো মিলেয়ে নেই-
৩২-জীবনে- জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার রক্ষণ
৩৩-গ্রেপ্তার – গ্রেপ্তার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচ
৩৪- জবরদস্তি- জবরদস্তি শ্রম নিষিদ্ধকরন
৩৫- বিচার- বিচার ও দণ্ড সম্পর্কে রক্ষণ
৩০- বিদেশী খেতাব গ্রহনে- বিদেশী খেতাব প্রভৃতি গ্রহন নিষিদ্ধকরন
৩১। আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার - আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার
অনুচ্ছেদ- ৩৬ থেকে ৩৯
অনুচ্ছেদ ৩৬ থেকে অনুচ্ছেদ ৩৯ পর্যন্ত মনে রাখতে আমি এই ছন্দটা মনে রাখতাম।
চসমা সংবা(দ)ক
চলুন, ছন্দের সাথে অনুচ্ছেদ গুলো মিলেয়ে নেই-
৩৬-চ-চলাফেরার স্বাধীনতা
৩৭-সমা – সমাবেশের স্বাধীনতা
৩৮- সং- সংগঠনের স্বাদহীনটা
৩৯- বাদ(ক)- চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক স্বাধীনতা
অনুচ্ছেদ- ৪০ থেকে ৪৩
অনুচ্ছেদ ৪০ থেকে অনুচ্ছেদ ৪৩ পর্যন্ত মনে রাখতে আমি এই ছন্দটা মনে রাখতাম।
পেধসগৃ
চলুন দেখি ছন্দের সাথে অনুচ্ছেদ গুলো মিলেয়ে নেই-
৪০-পে-পেশা বা বৃত্তির স্বাধীনতা
৪১-ধ – ধর্মীয় স্বাধীনতা
৪২- স- সম্পত্তির অধিকার
৪৩- গৃ- গৃহ ও যোগাযোগের রক্ষণ
অনুচ্ছেদ- ৪৮ থেকে ৫৪
অনুচ্ছেদ ৪৮ থেকে অনুচ্ছেদ ৫৪ পর্যন্ত মনে রাখতে আমি এই ছন্দটা মনে রাখতাম।
রাষ্ট্রপতি তার ক্ষমার মেয়াদে দায়মুক্তি পেতে অভিসংশন ও অপসারনের ক্ষমতা স্পীকার কে দিলেন।
চলুন, ছন্দের সাথে অনুচ্ছেদ গুলো মিলেয়ে নেই-
৪৮-রাষ্ট্রপতি -রাষ্ট্রপতি
৪৯-ক্ষমার –ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার
৫০- মেয়াদে- রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ
৫১- দায়মুক্তি- রাষ্ট্রপতির দায়মুক্তি
৫২-অভিসংশন –রাষ্ট্রপতির অভিসংশন
৫৩-অপসারনের – অসামর্থ্যের কারনে রাষ্ট্রপতির অপসারন
৫৪- স্পীকার- অনুপস্থিতি প্রভৃতির কালে রাষ্ট্রপতি পদে স্পীকার
অনুচ্ছেদ- ৫৫ থেকে ৫৮
অনুচ্ছেদ ৫৫ থেকে অনুচ্ছেদ ৫৮ পর্যন্ত মনে রাখতে আমি এই ছন্দটা মনে রাখতাম।
মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিগণ প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীর পদের মেয়াদ ঠিক করেন।
চলুন দেখি ছন্দের সাথে অনুচ্ছেদ গুলো মিলেয়ে নেই-
৫৫-মন্ত্রিসভায়- মন্ত্রিসভা
৫৬-মন্ত্রিগণ- মন্ত্রিগণ
৫৭- প্রধানমন্ত্রী- প্রধানমন্ত্রী পদের মেয়াদ
৫৮-অন্যান্য মন্ত্রীর পদের মেয়াদ- অন্যান্য মন্ত্রীর পদের মেয়াদ
অনুচ্ছেদ- ৬৫ থেকে ৭৯
অনুচ্ছেদ ৬৫ থেকে অনুচ্ছেদ ৭৯ পর্যন্ত মনে রাখতে আমি এই ছন্দটা মনে রাখতাম।
সংসদ সদস্যগন শুন্য পারিশ্রমিকে অর্থদন্ড ও পদত্যাগের কারনে দ্বৈত অধিবেশেনে ভাষনের অধিকার স্পীকার কে দিলেন। কিন্তু কোরাম না থাকায় স্থায়ী কমিটি ন্যায়পাল নিয়োগে বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তি পেতে সচিবালয় গঠন করেন।
চলুন, ছন্দের সাথে অনুচ্ছেদ গুলো মিলেয়ে নেই-
৬৫-সংসদ –সংসদ প্রতিষ্ঠা
৬৬-সদস্যগন –সংসদে নির্বাচিত হইবার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা
৬৭- শুন্য- সদস্যদের আসন শুন্য হওয়া
৬৮- পারিশ্রমিকে- সংসদ সদস্যদের পারিশ্রমিক প্রভৃতি
৬৯-অর্থদন্ড– শপথ গ্রহনের পূর্বে আসন গ্রহন বা ভোট দান করিলে সদস্যের অর্থদন্ড
৭০-পদত্যাগের কারনে – পদত্যাগ ইত্যাদি কারনে আসন শূন্য হওয়া
৭১- দ্বৈত- দ্বৈত সদস্যতায় বাঁধা
৭২-অধিবেশেনে –সংসদের অধিবেশেন
৭৩-ভাষনের –সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ ও বাণী
৭৩ক-অধিকার- সংসদ সম্পর্কে মন্ত্রীগণের অধিকার
৭৪- স্পীকার- স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার
৭৫-কোরাম– কার্যপ্রনালী বিধি, কোরাম প্রভৃতি
৭৬-স্থায়ী কমিটি – সংসদের স্থায়ী কমিটি সমূহ
৭৭- ন্যায়পাল- ন্যায়পাল
৭৮-সচিবালয়- সচিবালয়
এতক্ষন ধরে পড়ার পর যারা চিন্তা করছেন এই কবিতাই তো মনে থাকবে না, তাদের জন্য বলছি আর কোন কবিতা বা ছন্দ আমি তৈরি করি নি!!! কিন্তু তারপরেও আমি বলব, আরো বেশ কিছু অনুচ্ছেদ আপনাদের নিজেদের প্রয়োজনে পড়তেই হবে। সেগুলো হলঃ
- অনুচ্ছেদ-৪৬- দায়মুক্তি বিধানের ক্ষমতা
- অনুচ্ছেদ-৬৩- যুদ্ধ
- অনুচ্ছেদ- ৬৪- অ্যাটনী জেনারেল
- অনুচ্ছেদ- ৮১- টীকা হিসেবে অনেকবার এসেছে, টীকা হিসেবে তাই খুব ই গুরুত্বপূর্ণ
- অনুচ্ছেদ-৮৩-অধ্যাদেশ প্রনয়নের ক্ষমতা
- অনুচ্ছেদ- ১১৭-প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল
- অনুচ্ছেদ- ১২২-ভোটার তালিকায় নামভুক্তির যোগ্যতা
- অনুচ্ছেদ-১৪১ ক, খ, গ- জরুরী অবস্থা
- অনুচ্ছেদ- ১৪২-সংবিধান সংশোধন
- ১৪৫ক- আন্তর্জাতিক চুক্তি
- ১৪৮- পদের শপথ
সবশেষে বলব, সংবিধান টা ভালো করে পড়লে আপনি বাংলাদেশ বিষয়াবলী-২য় পত্রে অনেক ভালো মার্কস পাবেন। শুধু তাই নয়, যে কোন বড় প্রশ্নের উত্তরে আপনি সংবিধানের অনুচ্ছেদ গুলো উল্লেখ করতে পারবেন, এতেও আপনার জন্য অনেক লাভ, খাতার পৃষ্ঠা ভরার রাজনীতিতে যারা বিশ্বাস করেন তারা দেখবেন আপনি অনেক লিখেছেন এবং প্রশ্নের উত্তরে আপনি সংবিধান থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছেন সুতরাং তারা আপনাকে ভালো নম্বর -ই দিবেন।
লেখাটি কারো উপকারে লাগলে খুশী হব। যে কোন সমালোচনাও সাদরে গৃহীত হবে।।
অনেক ভালো থাকবেন সবাই।।
খান মুহম্মদ গোলাম রাব্বানী
বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার (সিভিল)
৩০ তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহন কারী একজন পরীক্ষার্থী।
নবনিযুক্ত সহকারী পরিচালক
বাংলাদেশ ব্যাংক
মাসরুফ হোসেন
সহকারী পুলিশ সুপার(শিক্ষানবিস)
২৮তম বিসিএস
বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী
সারদা,রাজশাহী।