ভর্তুকি :অর্থের সদ্ব্যবহার ও সঠিক লক্ষ্য স্থির করিতে হইবে
ভর্তুকির চাপ মাথায় নিয়া পথ হাঁটিতে হইতেছে সরকারকে। প্রতিবত্সরই বাড়িতেছে ভর্তুকির পরিমাণ। শুধু আমাদের দেশেই নহে, স্বল্পোন্নত কিংবা ধনী দেশগুলিতেও ভর্তুকি দিতে হইতেছে। তবে প্রশ্ন হইতেছে যে, ইহার মাত্রা কি হইবে? ভর্তুকির নামে অর্থের যথেচ্ছাচার করা হইবে, নাকি ঋণ করিয়া আনা অর্থের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করিতে সঠিক লক্ষ্য ঠিক করিয়া ভর্তুকি দেওয়া হইবে? ভর্তুকি দিলেও তাহা কোন কোন খাতে ব্যয় করিলে আমাদের জাতীয় উন্নয়নে কাজে লাগিবে, সেইটিও সতর্ক দৃষ্টি রাখিবার দাবি রাখে। নচেত্ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলি হইতে আমরা বিরূপ সমালোচনার মুখে পড়িব। কারণ, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থাগুলি চাহিতেছে না যে, বাংলাদেশে ভর্তুকির পরিমাণ বাড়াইয়া দেওয়া হউক। উদাহরণস্বরূপ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নাম বলা সমীচীন হইবে। আইএমএফ সবসময়ই সরকারকে বলিতেছে যে, ভর্তুকির পরিমাণ কমাইয়া আনিতে হইবে। মূলত এই সংস্থাটির সুপারিশের প্রেক্ষিতেই কিছুদিন আগে সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়াইয়াছে। এই দাম বাড়াইবার পিছনে ভর্তুকি কমাইয়া আনাই প্রধান যুক্তি। এইরূপভাবে সরকার বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি দিয়া আসিতেছে। যাহা অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতাকালে ঘোষণা দেওয়া হইয়া থাকে। যদিও যেই পরিমাণ ভর্তুকির ঘোষণা আমরা শুনিতে পাই, তাহার চাইতেও বেশি ভর্তুকি সরকারকে দিতে হইতেছে। আর সেইখানেও আইএমএফের প্রবল আপত্তি রহিয়াছে। আইএমএফ স্পস্টই বলিয়া দিয়াছে যে, ভর্তুকির পরিমাণ আমাদের মোট দেশজ উত্পাদনের দুই শতাংশের কাছাকাছি রাখিতে হইবে। ইহা বর্তমানে ৪ শতাংশের মতো।
ভর্তুকি লইয়া অভ্যন্তরীণভাবে সমালোচনা রহিয়াছে। সরকারকেও ভর্তুকির চাপ সামলাইতে গিয়া হিমশিম খাইতে হয়। কিন্তু ভর্তুকি না দিলে জনগণকে কম দামে পণ্য বা সেবা সরবরাহ করা যাইবে কিভাবে? এইখানেই সরকারের দায়। জনগণের প্রতি সরকারের এই দায় মিটাইতে গিয়া ভর্তুকির অংক বাড়িয়া যায়। কেননা, সরকারকে জনগণের কথাও চিন্তা করিতে হয়। পাঁচ বত্সরের জন্য ক্ষমতার আসনে এই জনগণই বসাইয়া থাকে। আর এখন চলিতেছে সরকারের শেষ বত্সর। ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাহার সরকারকে আরও একবার নির্বাচিত করিবার জন্য জনগণের প্রতি আরজ রাখিয়াছেন। তাহা হইলে ভর্তুকি কমাইয়া পণ্য ও সেবার দাম বাড়াইয়া দিলে জনগণের সামনে যে যাইবার সুযোগ কমিয়া যায় তাহাও তাহারা জানেন। তাই উন্নয়ন সহযোগীদের পরামর্শের সহিত জনগণের সুবিধার বিষয়টি ভাবিয়াই সিদ্ধান্ত লইতে গিয়া উভয় সংকট তৈরি হয়। তদুপরি, ইহা অস্বীকার করিবার জো নাই যে, ভর্তুকি আর্থিক শৃঙ্খলা নষ্ট করিতেও ভূমিকা রাখে।
অন্যদিকে ইহাও চরম সত্য যে, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে ইতিবাচক বলিবার জো নাই। বিনিয়োগে দুরবস্থা, রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া, দুর্বল অবকাঠামো, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সহায়ক আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি না থাকা, শ্রমিক অসন্তোষ, জ্বালানির তীব্র সংকটসহ নানা ধরনের সমস্যায় রহিয়াছে দেশের অর্থনীতি। এই অবস্থায় ভর্তুকি কমাইয়া আনার লক্ষ্যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করিবামাত্র তাহা জনগণের বিপক্ষেই চলিয়া যাইতেছে। যেমন, দফায় দফায় জ্বালানি তেল, বিদ্যুত্ ও সিএনজির দাম বাড়াইবার ফলে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জীবনধারণ জটিল হইয়া পড়িতেছে। মানুষের আয় বাড়ে নাই, অথচ ব্যয় বাড়িতেছে। যাহা দারিদ্র্যের হার বাড়াইতেও ভূমিকা রাখিতেছে। কাজেই উভয়দিক বিবেচনা করিয়া সিদ্ধান্ত লইতে হইবে, যাহাতে ভর্তুকির পরিমাণ দিনে দিনে কমাইয়া আনা যায়। অর্থনীতিকে শক্তিশালীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ লইতে হইবে, যাহা সাধারণের আয়-রোজগার বাড়াইবে এবং ভর্তুকি কমাইলেও তাহার চাপ সহ্য করিবার মতো সক্ষমতা তৈরি হইবে। ইহাই এখন অতীব জরুরি।
ভর্তুকি লইয়া অভ্যন্তরীণভাবে সমালোচনা রহিয়াছে। সরকারকেও ভর্তুকির চাপ সামলাইতে গিয়া হিমশিম খাইতে হয়। কিন্তু ভর্তুকি না দিলে জনগণকে কম দামে পণ্য বা সেবা সরবরাহ করা যাইবে কিভাবে? এইখানেই সরকারের দায়। জনগণের প্রতি সরকারের এই দায় মিটাইতে গিয়া ভর্তুকির অংক বাড়িয়া যায়। কেননা, সরকারকে জনগণের কথাও চিন্তা করিতে হয়। পাঁচ বত্সরের জন্য ক্ষমতার আসনে এই জনগণই বসাইয়া থাকে। আর এখন চলিতেছে সরকারের শেষ বত্সর। ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাহার সরকারকে আরও একবার নির্বাচিত করিবার জন্য জনগণের প্রতি আরজ রাখিয়াছেন। তাহা হইলে ভর্তুকি কমাইয়া পণ্য ও সেবার দাম বাড়াইয়া দিলে জনগণের সামনে যে যাইবার সুযোগ কমিয়া যায় তাহাও তাহারা জানেন। তাই উন্নয়ন সহযোগীদের পরামর্শের সহিত জনগণের সুবিধার বিষয়টি ভাবিয়াই সিদ্ধান্ত লইতে গিয়া উভয় সংকট তৈরি হয়। তদুপরি, ইহা অস্বীকার করিবার জো নাই যে, ভর্তুকি আর্থিক শৃঙ্খলা নষ্ট করিতেও ভূমিকা রাখে।
অন্যদিকে ইহাও চরম সত্য যে, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে ইতিবাচক বলিবার জো নাই। বিনিয়োগে দুরবস্থা, রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া, দুর্বল অবকাঠামো, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সহায়ক আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি না থাকা, শ্রমিক অসন্তোষ, জ্বালানির তীব্র সংকটসহ নানা ধরনের সমস্যায় রহিয়াছে দেশের অর্থনীতি। এই অবস্থায় ভর্তুকি কমাইয়া আনার লক্ষ্যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করিবামাত্র তাহা জনগণের বিপক্ষেই চলিয়া যাইতেছে। যেমন, দফায় দফায় জ্বালানি তেল, বিদ্যুত্ ও সিএনজির দাম বাড়াইবার ফলে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জীবনধারণ জটিল হইয়া পড়িতেছে। মানুষের আয় বাড়ে নাই, অথচ ব্যয় বাড়িতেছে। যাহা দারিদ্র্যের হার বাড়াইতেও ভূমিকা রাখিতেছে। কাজেই উভয়দিক বিবেচনা করিয়া সিদ্ধান্ত লইতে হইবে, যাহাতে ভর্তুকির পরিমাণ দিনে দিনে কমাইয়া আনা যায়। অর্থনীতিকে শক্তিশালীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ লইতে হইবে, যাহা সাধারণের আয়-রোজগার বাড়াইবে এবং ভর্তুকি কমাইলেও তাহার চাপ সহ্য করিবার মতো সক্ষমতা তৈরি হইবে। ইহাই এখন অতীব জরুরি।
No comments:
Post a Comment
Thanks for visiting.