Sunday, June 10, 2012

জমি মাপার ডিজিটাল যন্ত্র তৈরি করেছেন রুয়েটের ছাত্র


জমি মাপার ডিজিটাল যন্ত্র তৈরি করেছেন রুয়েটের ছাত্র


 রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থী মো: আল-হেলাল জমি পরিমাপের কাজে ব্যবহারের জন্য ডিজিটাল পরিমাপক যন্ত্র তৈরি করেছেন। মো: আল-হেলাল বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। 

ডিজিটাল জমি পরিমাপক যন্ত্র সম্পর্কে তিনি জানান, ‘জমি বা যেকোনো কিছু মাপতে সাধারণভাবে আমরা ফিতা বা স্কেল ব্যবহার করি। এতে সময়ের যেমন অপচয় হয় তেমনই প্রায়ই নির্ভুল পরিমাপও সম্ভব হয় না। 

কিন্তু ডিজিটাল পরিমাপক যন্ত্রের সাহায্যে যেসব জায়গায় ফিতা বা চেন নিয়ে মাপা সম্ভব নয় যেমন নদীর ভেতরে, কোনো সেতুর উচ্চতা বা কোনো উঁচু ভবনের কোনো অংশের দৈর্ঘ্য ইত্যাদি এ যন্ত্রের সাহায্যে দূর থেকেই মাত্র কয়েকটি বোতামে চাপ দিয়ে নির্ভুলভাবে তা নির্ণয় করা যাবে। এ জন্য নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে বস্তুর কাছে যাওয়ারও দরকার নেই। আর এ যন্ত্রের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে দূরত্বটি প্রদর্শিত হবে ডিজিটাল মনিটরে। তাই অত্যন্ত সূক্ষ্ম এমনকি দশমিক-এর পরে প্রায় চার-পাঁচ ঘর পর্যন্ত মান নেওয়া যাবে, যা ফিতা দিয়ে মেপে বের করা প্রায় অসম্ভব।’ 

তিনি আরও বলেন, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এ যন্ত্রে ব্যবহার করা হয়েছে মাইক্রোপ্রসেসর। আর সি প্রোগামিং ভাষায় লেখা হয়েছে এর প্রোগ্রাম। মাত্র দুই-তিন হাজার টাকার মধ্যেই এ যন্ত্র তৈরি করা সম্ভব।

হেলালের বন্ধু তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল (ইইই) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী খন্দকার মারছুস জানান, পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও তাঁর এই প্রকল্পের জন্য কম্পিউটার ও ইলেকট্রনিক সার্কিটের ওপর দক্ষতা অর্জন করতে হয়েছে। এ জন্য তাঁর লেগে গেছে কয়েকটি বছর। তার পরও তিনি হাল ছাড়েননি। শিক্ষক ও বন্ধুদের উৎসাহে তিনি শেষ পর্যন্ত সফলতার মুখ দেখেন। 

আল-হেলালের শিক্ষক কামরুজ্জা-মান জানান, ‘ডিজিটাল যুগে পরিমাপে ফিতা বা স্কেল থেকে বেরিয়ে আসার জন্যই হেলালের এ প্রচেষ্টা, যা তিনি বাস্তবে রূপ দিতে সক্ষম হয়েছেন।’ শিক্ষকদের উদ্যোগে তাঁর এ প্রকল্পটিকে নিয়ে সম্প্রতি ক্যাম্পাসে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। প্রদর্শনীতে রুয়েটের উপাচার্য সিরাজুল করিম চৌধুরীসহ পুরোকৌশল বিভাগের শিক্ষকেরা উপস্থিত থেকে সন্তোষ প্রকাশ করেন। 

পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষক ইকবাল মতিন এ যন্ত্র সম্পর্কে বলেন, ‘এটি আসলেই একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। সরকারি-বেসরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ যন্ত্র দেশের বাইরেও রপ্তানি করা সম্ভব হবে—যা দেশের জরিপের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করবে।

No comments:

Post a Comment

Thanks for visiting.