Tuesday, July 17, 2012

ইউনিয়ন পরিষদ

৮ঌ হাজার গ্রাম অধ্যুষিত আমাদের বাংলাদেশ ৷ সাধারণত প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার লোক অধ্যুষিত কয়েকটি গ্রাম নিয়ে গঠিত হয় এক একটি ইউনিয়ন ৷ আর ইউনিয়নের প্রয়োজনের প্রতি দৃষ্টি রেখে স্থানীয় সম্পদকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের পাশাপাশি ছোট-খাট বিরোধ-মামলার নিষ্পত্তির জন্যই ইউনিয়ন পরিষদের সৃষ্টি ৷ ইউনিয়ন পরিষদ একজন চেয়ারম্যান ও ১২ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে  এর মধ্যে ৩টি আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত৷ পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ প্রাপ্ত বয়স্কদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবেন ৷ তবে সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত সদস্যগণ বাকি সনগুলো থেকেও নির্বাচিত হতে পারবেন ৷ সাধারণ আসনে নির্বাচিত সদস্যগণ একটি ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত হলেও সংরক্ষিত আসনে মহিলা সদস্যগণ তিনটি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এলাকা থেকে নির্বাচিত হবেন 


ইউনিয়ন পরিষদের গঠন প্রকৃতি।-
   (১) ইউনিয়ন পরিষদ একজন চেয়ারম্যান ও ১২ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে। এর মধ্যে ৩টি আসন মহিলাদের মধ্যে সংরক্ষিত থাকবে।
            [তবে প্রকাশ থাকে যে, পার্বত্য চট্রগ্রাম, বান্দরবন এবং খাগড়াছড়ি জেলার ইউনিয়নসমূহের বিভিন্ন শ্রেণীর জনগনের পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রতিনিধিত্ব প্রদানের জন্য সরকার উহার বিবেচনা মোতাবেক তবে তিন জনের অধিক নয় এমন সংখ্যক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিতে পারবেন।]
   (২) উপধারা (৩) এর বিধান সাপেক্ষে, চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ এই অধ্যাদেশ ও বিধির মতে প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবেন।
   (৩) প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদে শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য তিনটি আসন সংরক্ষিত থাকবে যা অত:পর সংরক্ষিত আসন বলে কথিত হবে, যারা প্রত্যক্ষ এই আসন ও বিধির বিধান অনুসারে প্রাপ্ত বয়স্ক ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবেন।
            তবে শর্ত থাকে যে, (১) উপধারার বিধান অনুসারে নয়টি সাধারন আসনের নির্বাচনে কোন মহিলা নির্বাচিত হতে এই উপধারা বারিত করবে না।
    (৪) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উক্ত পরিষদের একজন সদস্য বলে গণ্য হবেন।
    (৫) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সম্মানী পাবেন।

ইউনিয়ন পরিষদের অফিসার ও কর্মচারী

প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে রয়েছে একজন পূর্ণকালীন ইউনিয়ন সচিব যিনি ডেপুটি কমিশনার বা ডিসি কর্তৃক মনোনীত , একজন দফাদার বা গ্রাম পুলিশ, ৯ জন চৌকিদার যারা থানা নির্বাহী অফিসার বা টিএনও কর্তৃক মনোনীত হবেন [স্থানীয় সরকার(ইউনিয়ন পরিষদ) অধ্যাদেশ ১ঌ৮৩, ধারা ৪২]

নিম্নে ইউনিয়ন পরিষদের মোট জনবল এবং তাদের সম্মানী বা বেতনের একটি ছক দেওয়া হলো-

নির্বাচিত এবং মনোনীত জনবল
মোট সংখ্যা
মোট বেতন এবং সম্মানী
(প্রত্যেকের মাসিক ভিত্তিতে)
চেয়ারম্যান 
১০৫০.০০ টাকা
সদস্য(পুরুষ)
৪০০.০০ টাকা
সদস্য(মহিলা)
৪০০.০০ টাকা
সচিব
১৭৫০.০০ টাকা
দফাদার বা গ্রাম পুলিশ
১০০০.০০ টাকা
চৌকিদার
৭০০.০০ টাকা
মোট 
২৪
১৪৯০০.০০ টাকা
সুত্র : আহমেদ, টি (১৯৯৮): স্থানীয় সরকার সংস্কার ভাবনার দুই দশক, পৃষ্ঠা ৩৩





ইউনিয়ন পরিষদের কাজ বা দায়-দায়িত্ব / ইউনিয়ন পরিষদের সেবাসমূহ
স্থানীয় মানুষের সমস্যার  সমাধানের জন্য স্থানীয় সরকারের ভূমিকা প্রধানত; দু প্রকারের একটি হলো সেবা প্রদানকারী ভুমিকা যেমন রিলিফ বিতরণ, অবকাঠামো নির্মাণ ও বিচার সালিশ করা এবং অপরটি হলো সচেতনায়নকারীর ভূমিকা। ১ঌ৮৩ সালের স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) অধ্যাদেশ অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতা ও কাজকে প্রধানত ৬ টি ভাগে ভাগ করা যায় ৷ যেমন:

ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যে সেবাসমূহ পাওয়া যেতে পারে:
পুলিশি ও প্রতিরক্ষা সেবা
রাজস্ব ও প্রশাসনিক সেবা
উন্নয়নমুলক সেবা
হস্তান্তরিত সরকারী কাজের মাধ্যমে সেবা
আদালত বা বিচার সংক্রান্ত
নাগরিক সেবা

   যে বিষয়গুলিতে ইউনিয়ন পরিষদের আইনগত সেবা প্রদানের সুযোগ রয়েছে :
তালাকের ক্ষেত্রে
  ভরণপোষণের ক্ষেত্রে
বহুবিবাহের ক্ষেত্রে
বিবাহ ও তালাক নিবন্ধিকরণ
বাল্যবিবাহ নিরোধ
যৌতুক নিরোধ
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন
আইনগত সহায়তা প্রদান








প্রথম তফসিল
ইউনিয়ন পরিষদ ও গ্রামীণ পুলিশের কার্যাবলী
অংশ : ইউনিয়ন পরিষদের কার্যাবলী
(৩০ ধারা দেখুন)

১ । জনপথ রাজপথের ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণ ;
২ । সরকারী স্থান, উন্মুক্ত জায়গা, উদ্যান ও খেলার মাঠ-এর ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণ ;
৩ ।    জনপথ, রাজপথ ও সরকারি স্থানে আলো জ্বালানো ;
৪ । সাধারণভাবে গাছ লাগানো ও সংরক্ষণ এবং বিশেষভাবে জনপথ ও রাজপথ ও সরকারি জায়গায় গাছ লাগানো এবং সংরক্ষণ ;
৫ । কবরস্থান, শ্মশান, জনসাধারণের সভার স্থান ও জনসাধারণের অন্যান্য সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা ;
৬ ।   পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা ও তা সংরক্ষণ ;
৭ ।  জনপথ, রাজপথ এবং সরকারি স্থান নিয়ন্ত্রণ ও অনধিকার প্রবেশ রোধ ;
৮ ।   জনপথ, রাজপথ এবং সরকারি জায়গায় উত্‍পাত ও উহার কারণ রোহিতকরণ ;
৯ । ইউনিয়নের পরিচ্ছন্নতার জন্য নদী, বন ইত্যাদির তত্ত্বাবধান, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি সাধন এবং অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ ;
১০ । গোবর ও রাস্তার আবর্জনা সংগ্রহ, অপসারণ ও ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা ;
১১ । অপরাধমূলক ও বিপজ্জনক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ;
১২ । মৃত পশুর দেহ অপসারণ ও নিয়ন্ত্রণ ;
১৩ । পশু জবাই নিয়ন্ত্রন করা;
১৪ । ইউনিয়নের দালান নির্মাণ ও পুনঃ নির্মাণ ও পুনঃনির্মাণ নিয়ন্ত্রণ;
১৫ ।  বিপজ্জনক দালান ও সৌধ নিয়ন্ত্রণ;
১৬ । কুয়া, পানি তোলার কল, জলাধার, পুকুর এবং পানি সরবরাহের অন্যান্য কাজের ব্যবস্থা ও সংরক্ষণ;
১৭ ।  খাবার পানির  উত্‍স দূষণ রোধের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ;
১৮ ।   জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সন্দেহযুক্ত কুপ, পুকুর বা পানি সরবরাহের অন্যান্য স্থানের পানি ব্যবহার নিষিদ্ধ করা;
১৯ । খাবার জন্য সংরক্ষিত কুপ, পুকুর বা পানি সরবরাহের অন্যান্য স্থানে বা নিকটবর্তী স্থানে গোসল, কাপড় কাচা বা পশুর গোসল নিষিদ্ধ করা বা নিয়ন্ত্রণ করা;
২০ । পুকুর বা পানি সরবরাহের অন্যান্য উত্‍স-এ  বা নিকটবর্তী স্থানে শন, পাট বা অন্যান্য গাছ ভেজানো নিষিদ্ধকরণ বা নিয়ন্ত্রণ করা;
২১ ।   আবাসিক এলাকার মধ্যে চামড়া রং করা বা পাকা করা নিষিদ্ধ করা বা নিয়ন্ত্রণ করা;
২২ । আবাসিক এলাকার মাটি খনন করে পাথর বা অন্যান্য বস্তু উত্তোলন নিষিদ্ধকরণ বা নিয়ন্ত্রণকরণ;
২৩ । আবাসিক এলাকার ইটের ভাটি, মাটির পাত্র বা অন্যান্য ভাটি নির্মাণ নিষিদ্ধকরণ বা নিয়ন্ত্রণকরণ ;
২৪ । গৃহপালিত পশু বা অন্যান্য পশু বিক্রয়ের ঐচ্ছিক তালিকাভুক্তিকরণ;
২৫ । মেলা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা;
২৬ ।   জনসাধারণের উত্‍সবাদি পালন;
২৭ ।   অগ্নিকান্ড, বন্যা, শিলাবৃস্টিসহ ঝড়, ভূমিকম্প বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় ত্রাণতত্‍পরতার ব্যবস্থা করা;
২৮ ।  বিধবা, এতিম, গরিব ও দুঃস্থ ব্যক্তিদের সাহায্য করার ব্যবস্থা করা;
২৯ । খেলাধুলার ও ক্রীড়ার উন্নতি সাধন;
৩০ । শিল্প ও সামাজিক উন্নয়ন, সমবায় আন্দোলন ও গ্রামীণ শিল্পের প্রসার, উন্নয়ন সাধন ও উত্‍সাহ দান;
৩১ । বাড়তি খাদ্য উত্পাদনের ব্যবস্থা গ্রহণ;
৩২ । পরিবেশ ব্যবস্থাপনার কাজ;
৩৩ ।   গবাদি পশুর খোয়াড় নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষণাবেক্ষনের ব্যবস্থা করা;
৩৪ । প্রাথমিক চিকিত্সা কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা;
৩৫ ।   গ্রন্থাগার ও পাঠাগারের ব্যবস্থা করা;
৩৬ । ইউনিয়ন পরিষদের মত একই কাজে নিয়োজিত অন্যান্য সংস্থার সাথে সহযোগিতা;
৩৭ । জেলা প্রশাসক বা থানা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে শিক্ষার উন্নয়নে সাহায্য করা এবং
৩৮ ।  ইউনিয়নের বাসিন্দা বা পরিদর্শনকারীর উন্নয়ন, স্বাস্থ্য , নিরাপত্তা, আরাম-আয়েস বা সুযোগ-সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ ।
 
[ প্রথম তপসীল, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) অধ্যাদেশ, ১৯৮৩]

নারীর ক্ষমতায়ন ও ইউনিয়ন পরিষদ :
"বর্তমান সরকারের নারী ক্ষমতায়নের লক্ষে সদিচ্ছা থাকা সত্বেও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত মহিলা প্রতিনিধিরা এখনও তেমন কিছু করতে পারছেন না । এরজন্য যে সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টি হওয়া দরকার এখনও তা হয়নি । আসলে মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন হয়নি ।"
ড: শিরিন আখতার, অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ।
সংরক্ষিত আসন : বর্তমান অবস্থা
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্যদের বৈষ্যমের চিত্র ফুটি ওঠে । ম্যানুয়ালে সুস্পষ্ট কোন কাজের উল্লেখ নেই এই দোহাই দিয়ে পুরুষ সদস্যরা নারী সদস্যদের কাজ করতে বাধা দেয় । প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদেই নারী সদস্যরা কমবেশী বৈষ্যমের শিকার হচ্ছেন । এইসব নারী সদস্যের অনেকেই জানেন না তাদের দায়িত্ব কি । কারণ এ সংক্রান্ত নির্দেশ বা সার্কুলার মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো হলেও এইসব সদস্যদের হাতে কখনই পৌঁছে না বলে অভিযোগ রয়েছে ।
  • বিভিন্ন সার্কুলার অনুযায়ী সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্যদের নারী ও শিশু নির্যাতন নিরোধ সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া , সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন, ইউনিয়ন পরিষদের স্থায়ী কমিটিগুলোর এক-তৃতীয়াংশের এবং মোট প্রকল্প কমিটির এক-তৃতীয়াংশের সভাপতির দায়িত্ব পালন, সরকার ও ইউনিয়ন পরিষদে সময় সময় নির্দেশিত অন্যান্য কার্যাবলী এবং গ্রাম সরকার আইন-২০০৩ অনুযায়ী তার নির্বাচনী এলাকাধীন সব গ্রাম সরকারের উপদেষ্টা এবং সন্ত্রাসসংক্রান্ত প্রতিবেদন ইউনিয়ন পরিষদে পেশ এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । একই ধরণের অধিকার দেয়া হয়েছে সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোর সংরক্ষিত পদে নির্বাচিত নারী সদস্যদের । কিন্তু এ অধিকার  প্রায় সবই কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ ।
  • ইউপি চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে সব সদস্যকে নিয়ে মাসিক সভা করার বিধান থাকলেও সেখানে নারী সদস্যরা উপেক্ষিত থাকেন । এ ধরণের পরিস্থিতিতে নারী সদস্যরা চুপ থাকতে বাধ্য হন । তা না হলে তাদের অশালীন আচরণ বা বা মন্তব্যের মুখোমুখি হতে হয় ।
  • সাধারণ সদস্যদের চেয়ে তাদের নির্বাচনী এলাকা অনেক বেশী হলেও যাতায়াতের জন্য কোন ভাতার ব্যবস্থা নেই ।
  • সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যদের সঙ্গে পুরুষ সদস্যদের বৈষম্যমূলক আচরণ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব নাজমুন আরা খানম বলেন," ইউনিয়ন পরিষদ অধ্যাদেশ বা বিভিন্ন সার্কুলারে কখনোই বৈষম্য করা হয়নি । বরং বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সার্কুলারে সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্যদের জন্য কিছু বিশেষ দায়িত্ব ও কাজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে ।"
  • কিন্তু বাস্তবে বৈষম্যমূলক আচরণ, বাজেট সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের প্রতি নারীদের আগ্রহ কমে যাচ্ছে বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ডঃ জারিনা রহমান খান । ১৯৯৭ এবং ২০০৩ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের উপর একটি তুলনামূলক গবেষণার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংরক্ষিত আসনে নারীদের অংশগ্রহণের হার প্রথম নির্বাচনের চেয়ে ২য় নির্বাচনে ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ কমে গেছ । এমনকি ২০০৩ সালের নির্বাচনে ৪০ শতাংশ নারী পুর্ণবার সংরক্ষিত নির্বাচন করতে আগ্রহ প্রকাম করেনি ।"
  • শুধু ইউনিয়ন পরিষদ নয়, সিটি কর্পোরেশনগুলোর সংরক্ষিত পদে নির্বাচিত ওয়ার্ড কমিশনাররাও বিভিন্ন ধরণের বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন । এদিকে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সাধারণ আসন এবং সংরক্ষিত আসনের কমিশনারদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কিত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জারি করা একটি পরিপত্রের বৈষম্যমূলক অংশ চ্যালেঞ্জ করে ১০ কমিশনার এক রিট আবেদন করেন । এ আবেতনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৪ সালের ১৬ আগষ্ট সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত নারী কমিশনারদের কর্তৃত্, ক্ষমতা ও কর্তব্য সাধারণ আসনে নির্বাচিত কমিশনারদের সমান হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রীম কোর্টের হাইর্কোট বিভাগ ।
তথ্যসূত্র: স্থানীয় সরকারের সংরক্ষিত আসন: "বৈষম্যের শিকার নারী সদস্যরা উত্‍সাহ হারাচ্ছেন নির্বাচনে": মানসুরা হোসাইন; প্রথম আলো, তারিখ-২৫.০৩.২০০৬ ইং