Tuesday, July 17, 2012

জেলা পরিষদ

জেলা বোর্ড প্রথম স্থাপিত হয় ১৮৮৫ সালে৷ ১৯৫৯ সালে তাকে বলা হলো জেলা কাউন্সিল৷ বাংলাদেশে এই জেলা কাউন্সিলই হয় জেলা পরিষদ৷ এই জেলা পরিষদগুলো চালিত হওয়ার জন্যে এখন যে আইনটি বলবত্‍ আছে তা হলো ২০০০ সালের জেলা পরিষদ আইন৷ এই আইনের বিধান অনুযায়ী যতো শীঘ্র সম্ভব প্রত্যেক জেলায় একটি করে জেলা পরিষদ স্থাপিত হবে এবং সংশ্লিষ্ট জেলার নামে তার নামকরণ হবে৷ এই জেলা পরিষদ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হবে এবং এর স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকবে এবং এই আইন ও বিধি সাপেক্ষে এর স্থাবর ও অস্থাবর সকল প্রকার সম্পত্তি অর্জন করার, অধিকারে রাখার এবং হস্তাস্তর করার ক্ষমতা থাকবে৷ জেলা পরিষদ এর নামে মামলা দায়ের করতে পারবে বা এর বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাবে৷ জেলা পরিষদের মেয়াদ হবে তার প্রথম সভায় মিলিত হবার তারিখ হতে পাঁচ বছর৷ তবে উক্ত মেয়াদ শেষ হবার পরেও নির্বাচিত নতুন পরিষদ প্রথম সভায় মিলিত না হওয়া পর্যন্ত পরিষদ কার্য চালিয়ে যেতে পারবে৷


জেলা পরিষদের গঠন-প্রকৃতি 
বর্তমান জেলা পরিষদে থাকবেন একজন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য ও সংরক্ষিত আসনে ৫ জন মহিলা সদস্য৷ এরা নির্বাচিত হবেন পরোক্ষ ভোটে৷ জেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী গঠিত হবে এক নির্বাচক মন্ডলী৷ প্রত্যেক জেলায় 
অন্তর্ভুক্ত কর্পোরেশনের চেয়ারম্যন ও কমিশনারগণ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার চেয়ারম্যান ও কমিশনারগণ এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নিয়ে হবে এই নির্বাচনমন্ডলী৷ একটি জেলায় মোটামুটিভাবে সোয়াশো সদস্যের নির্বাচকমন্ডলী হবে এবং তারা একুশ জনকে নির্বাচিত করে জেলা পরিষদ গঠন করবেন৷ আইন অনুযায়ী জেলার সংসদ সদস্যরা পরিষদের উপদেষ্টা হবেন৷ এক্ষেত্রে তাদের পরামর্শ দানের অধিকার থাকবে৷ তবে তাদের সুপারিশ কার্যকরী হবেই, এমন বিধি বিধান নেই৷ তবে প্রকৃত সত্য হলো, বাংলাদেশে আজো কোনো নির্বাচিত জেলা পরিষদ ক্ষমতা গ্রহণ করে নি৷ প্রশাসক বা মনোনীত ব্যক্তি জেলা পরিষদের দফতর অলংকার করেছেন৷

চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের নির্বাচন করার যোগ্যতা 
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে নির্বাচনে মনোনয়ন লাভ ও নির্বাচিত হওয়ার জন্যে 
প্রার্থীর যেসব যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে তা এইরূপ: তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে, পঁচিশ বছর বয়সী হতে হবে ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্যে প্রস্তুতকৃত সে জেলার আপাতত: বলবত্‍ ভোটার তালিকায় তার নাম থাকতে হবে৷


চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের আপসারণ 
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ নির্দিষ্ট কারণে অপসারণযোগ্য৷ কারণগুলো হলো: পরপর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকা, পরিষদ ও রাষ্ট্রের জন্যে ক্ষতিকর কার্যকলাপে জড়িত থাকা, 
দুর্নীতি ও অসদাচারণজনিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়া, তার কৃত্য বা কর্তব্যকর্ম পালনে অস্বীকার করা বা অসমর্থ হওয়া, অসদাচারণ বা ক্ষমতার অপব্যবহারের জন্যে দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং পরিষদের অর্থ বা সম্পত্তির ক্ষতি বা অপপ্রয়োগ করা৷


জেলা পরিষদের 
কর্মকর্তা ও কর্মচারী 
নির্ধারিত শর্তানুযায়ী সরকার প্রত্যেক পরিষদের জন্যে সরকারের উপসচিব মর্যাদার একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, একজন সচিব এবং অন্যান্য কর্মকর্তা নিয়োগ করতে পারেন এবং তারা এই আইন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবেন৷ পরিষদের 
কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্যে পরিষদ প্রয়োজনবোধে নির্ধারিত শর্তানুযায়ী অন্যান্য কর্মচারী নিয়োগ করতে পারেন৷ 

জেলা পরিষদের নির্বাহী ক্ষমতা ও কার্যাবলী 
পরিষদের কর্তব্যসমুহ যথাযথভাবে সম্পন্ন করার জন্যে যা যা করা দরকার তা সবই চেয়ারম্যান নিজে কিংবা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে করবেন ৷ পরিষদের নির্বাহী বা অন্য কোনো কার্য পরিষদের নামে গৃহীত হয়েছে বলে প্রকাশ করা হবে৷

জেলা পরিষদের বিধি দ্বারা নির্ধারিত কার্যাবলী সম্পাদনের জন্যে পরিষদ প্রয়োজনীয় সংখ্যক কমিটি বা সাব-কমিটি গঠন করতে পারবে৷ নিচের বিষযগুলো সম্পর্কে কমিটি বা সাব-কমিটি গঠন করা যাবে
: আইন শৃঙ্খলা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পা, নর্দমা ও পয়:নিস্কাশন ব্যবস্থা, যোগাযোগ ও ভৌত  অবকাঠামো উন্নয়ন, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপণা, এনজিও কার্যক্রম ও আত্মকর্মসংস্থান, মহিলা ও শিশু উন্নয়ন, যুব উন্নয়ন, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি, নিরীক্ষণ, কৃষি, সেচ, সমবায়, মত্‍স ও পশুপালন, সমাজকল্যান, সমাজকেন্দ্র ও অন্যান্য৷ এই কমিটিগুলো কিভাবে গঠিত হবে, কি কি কাজ করবে তা বিধিমালা দ্বারা নির্ধারিত৷


জেলা পরিষদের বাজেট 
জেলা পরিষদের বাজেট প্রক্রিয়ার বিধান রয়েছে৷ এতে বলা হয়েছে যে, পরিষদ তার এখতিয়ারভূক্ত যে কোনো বিষয়ে তার সংগতি অনুযায়ী পাঁচসালা পরিকল্প
া বানাবে৷ এ ব্যাপারে তারা অধস্তন পরিষদের সুপারিশ নেবে৷ তারা পরিকলপণা প্রণয়নে তিনটি বিষয়ে নজর দেবে, যথা- (১) অর্থের যোগান কেমন করে হবে; (২) কিভাবে তা বাস্তবায়িত হবে; এবং (৩) পরিকল্পা সম্পর্কিত সমুদয় তথ্য৷ পরিকল্পা প্রণয়নে জনগণের মতামত নিতে হবে এবং সরকারের সুপরিশ বা পরামর্শ বিবেচনা করতে হবে৷


জেলা পরিষদের করারোপন 
পরিষদ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, দ্বিতীয় তফসিলে উল্লেখিত সকল বা যে কোনো কর, রেইট, টোল এবং ফিস নির্ধারিত পদ্ধতিতে আরোপ করতে পারবে৷ করের উত্‍সগুলো হলো:
(১) বিজ্ঞাপন কর
;
(২) পরিষদের রাস্তা, পুল ও ফেরির উপর টোল
;
(৩) পরিষদের জনকল্যাণমূলক কাজের জন্যে রেইট
;
(৪) পরিষদ স্থাপিত ও পরিচালিত স্কুলের জন্যে ফিস
;
(৫) পরিষদের সেবা সরবরাহের জন্যে চার
;
(৬) পরিষদের জনকল্যাণমূলক কাজে উপকারের জন্যে ফিস
 এবং
(৭) সরকারের হুকুমে আরোপিত কোনো কর৷


জেলা পরিষদের কার্যাবলী 
জেলা পরিষদের দায়িত্ব ও কার্যাবলী দু'রকমের - আবশ্যিক এবং ঐচ্ছিক৷ জেলা পরিষদ আইন ২০০০ এর প্রথম তফসিলের প্রথম অংশে বাধ্যতামূলক কার্যাবলীর তালিকা দেয়া হযেছে৷ এগুলো হলো
:
 
১. জেলার সকল উন্নয়ন কার্যক্রমের পর্যালোচনা৷
২. উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভা 
কর্তৃক গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি পর্যালোচনা৷
৩. সাধারণ পাঠাগারের ব্যবস্থা ও উহার রক্ষণাবেক্ষণ৷
৪. উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা বা সরকার কর্তৃক সংরক্ষিত নহে এই প্রকার জনপথ, কালভার্ট ও ব্রীজ এর নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ৷
৫. রাস্তার পাশে জনসাধারণের ব্যবহার্য স্থানে বৃক্ষরোপণ ও উহার সংরক্ষণ৷
৬. 
জনসাধারনের ব্যবহারার্থে উদ্যান, খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত স্থানের ব্যবস্থা ও উহার রক্ষণাবেক্ষণ৷
৭. সরকারী , উপজেলা পরিষদ বা পৌরসভার রক্ষণাবেক্ষণে নহে এমন খেয়াঘাটের ব্যবস্থাপণা ও নিয়ন্ত্রণ৷
৮. সরাইখানা, ডাকবাংলা এবং বিশ্রামাগারের ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণ৷
৯. 
জেলা পরিষদের অনুরূপ কার্যাবলী সম্পাদনরত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সংগে সহযোগিতা৷
১০. উপজেলা ও পৌরসভাকে সহায়তা, সহযোগিতা এবং উত্‍সাহ প্রদান৷
১১. সরকার কর্তৃক জেলা পরিষদের উপর অর্পিত উন্নয়ন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন৷
১২. সরকার কর্তৃক আরোপিত অন্যান্য কাজ৷

জেলা পরিষদ আইনের প্রথম তফসিলের দ্বিতীয় অংশে ৬৮টি ঐচ্ছিক দায়দায়িত্বের কথা বলা হয়েছে৷
এ দায়িত্বগুলো শিক্ষা, সংস্কৃতি, সমাজকল্যাণ, অর্থনৈতিক কল্যাণ, জনস্বাস্থ্য, গণপূর্ত সম্পর্কিত এবং আরো কিছু সাধারণ দায়িত্ব৷ নিচে এই দায়িত্বগুলো উল্লেখ করা হলো
:

(ক) শিক্ষা 
১৷ বিদ্যালয় স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ৷
২৷ ছাত্রাবাসের জন্য দালান নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ৷
৩৷ ছাত্র বৃত্তির ব্যবস্থা৷
৪৷ শিক্ষক প্রশিক্ষণ৷
৫৷ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অর্থমঞ্জুরী প্রদান৷
৬৷ শিক্ষামূলক জরিপ গ্রহণ, শিক্ষা পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং উহার বাস্তবায়ন৷
৭৷ শিক্ষা উন্নয়নের লক্ষ্যে গঠিত সমিতিসমূহের উন্নয়ন ও সাহায্য৷
৮৷ উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা উন্নয়ন৷
৯৷ স্কুলের শিশু-ছাত্রদের জন্য দুগ্ধ সরবরাহ ও খাদ্যের ব্যবস্থা৷
১০৷ বই প্রকাশনা ও ছাপাখানা রক্ষণাবেক্ষণ৷
১১৷ এতিম ও দুস্থ ছাত্রদের জন্য বিনামূল্যে অথবা কম মূল্যে পাঠ্যপুস্তকের ব্যবস্থা৷
১২৷ স্কুলের বই এবং ষ্টেশনারী মাল বিক্রয় কেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণ৷
১৩৷ শিক্ষার উন্নয়নে সহায়ক অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ৷

(খ) সংস্কৃতি 
১৪৷ তথ্যকেন্দ্র স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ৷
১৫৷ সাধারণ সংস্কৃতিমূলক কর্মকান্ড সংগঠন৷
১৬৷ জনসাধারণের জন্য ক্রীড়া ও খেলাধুলার উন্নয়ন৷
১৭৷ সরকারী 
প্রতিষ্ঠান এবং জনসাধারণের ব্যবহার্য স্থানে রেডিও ও টেলিভিশন-এর ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণ৷
১৮৷ যাদুঘর ও আর্ট-গ্যালারী স্থাপন ও প্রদর্শনীর সংগঠন৷
১৯৷ পাবলিক হল, কমিউনিটি সেন্টার প্রতিষ্ঠা এবং জনসভার জন্য স্থানের ব্যবস্থা৷
২০৷
 নাগরিক শিক্ষার প্রসার এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও পুর্নগঠন, স্বাস্থ্য, সমাজ উন্নয়ন, কৃষি শিক্ষা, গবাদিপশু প্রজনন সম্পর্কিত এবং জনস্বার্থ সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়ের উপর তথ্য প্রচার৷
২১৷ মহানবী (সঃ)-এর জন্মদিবস, জাতীয় দিবস, জাতীয় শোক দিবস, শহীদ দিবস ও অন্যান্য জাতীয় অনুষ্ঠান উদ্যাপন৷
২২৷ বিশিষ্ট অতিথিগণের অভ্যর্থনা৷
২৩৷ 
শরীর চর্চার উন্নয়ন, খেলাধুলায় উত্‍সাহ দান এবং সমাবেশ ও প্রতিযোগিতামূলক ক্রীড়া ও খেলাধুলার ব্যবস্থা করা৷
২৪৷ স্থানীয় এলাকার ঐতিহাসিক এবং আদি বৈশিষ্ট্যসমূহ সংরক্ষণ৷
২৫৷ সংস্কৃতি উন্নয়নমূলক অন্যান্য ব্যবস্থা৷

(গ) সমাজকল্যাণ 
২৬৷ 
দুস্থ ব্যক্তিদের জন্য কল্যাণ সদন, আশ্রয় সদন, এতিমখানা, বিধবা সদন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও রক্ষনাবেক্ষণ৷
২৭৷ মৃত নিঃস্ব ব্যক্তিদের দাফনের ও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ব্যবস্থা করা৷
২৮৷ 
ভিক্ষাবৃত্তি, জুয়া, মাদকদ্রব্য সেবন, কিশোর অপরাধ এবং অন্যান্য সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ৷
২৯৷ 
জনগণের মধ্যে সামাজিক, নাগরিক এবং দেশপ্রেমমূলক গুণাবলী উন্নয়ন এবং গোত্র বা গোষ্ঠীগত, বর্ণগত এবং সমপ্রদায়গত কুসংস্কার নিরুত্‍সাহিত করা৷
৩০৷ সমাজসেবার জন্য স্বেচ্ছাসেবকদের সংগঠিতকরণ৷
৩১৷ দরিদ্রদের জন্য আইনগত সহায়তা৷
৩২৷ নারী ও পশ্চাত্‍পদ শ্রেণীর পরিবারের সদস্যদের কল্যাণমূলক কার্যক্রম গ্রহণ৷
৩৩৷ সালিশী ও আপোষের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ৷
৩৪৷ সমাজকল্যাণ ও সমাজ উন্নয়নমূলক অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ৷

(ঘ) অর্থনৈতিক কল্যাণ 
৩৫৷ আদর্শ কৃষি খামার স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ৷
৩৬৷ 
উন্নত কৃষি পদ্ধতি জনপ্রিয়করণ, উন্নত কৃষি যন্ত্রপাতির সংরক্ষণ ও কৃষকগণকে উক্ত যন্ত্রপাতি ধারে প্রদান এবং পতিত জমি চাষের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ৷
৩৭৷ 
শস্য পরিসংখ্যান, সংরক্ষণ, ফসলের নিরাপত্তা বিধান, বপনের উদ্দেশ্যে বীজের ঋণদান, রাসায়নিক সার বিতরণ এবং উহার ব্যবহার জনপ্রিয়করণ এবং পশুখাদ্যের মওজুদ গড়িয়া তোলা৷
৩৮৷
 কৃষিঋণ প্রদান ও কৃষিশিক্ষার উন্নয়ন এবং কৃষি উন্নয়নমূলক অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ৷
৩৯৷ বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত এবং কৃষিকাজে ব্যবহার্য পানি সরবরাহ, জমানো ও নিয়ন্ত্রণ৷
৪০৷ গ্রামাঞ্চলে বনভূমি সংরক্ষণ৷
৪১৷ ভূমি সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার এবং জলাভূমির পানি নিষ্কাশন৷
৪২৷ বাজার স্থাপন, নিয়ন্ত্রণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ৷
৪৩৷ 
গ্রামঞ্চলের শিল্পসমূহের জন্য কাঁচামাল সংগ্রহ এবং উত্‍পাদিত সামগ্রীর বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা৷
৪৪৷ 
শিল্প-স্কুল স্থাপন, সংরক্ষণ এবং গ্রামভিত্তিক শিল্পের জন্য শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ প্রদান৷
৪৫৷ গ্রাম্য বিপণী স্থাপন ও সংরক্ষণ৷
৪৬৷ সমবায় আন্দোলন জনপ্রিয়করণ এবং সমবায় শিক্ষার উন্নতিসাধন৷
৪৭৷ অর্থনৈতিক কল্যাণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ৷
৪৮৷ জনস্বাস্থ্য বিষয়ক শিক্ষার উন্নয়ন৷
৪৯৷ 
ম্যালেরিয়া ও সংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন৷
৫০৷ প্রাথমিক চিকিত্‍সাকেন্দ্র স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ৷
৫১৷ ভ্রাম্যমাণ চিকিত্‍সক দল গঠন৷
৫২৷ চিকিত্‍সা সাহায্য প্রদানের জন্য সমিতি গঠনে উত্‍সাহ দান৷
৫৩৷ 
চিকিত্‍সা-শিক্ষার উন্নয়ন এবং চিকিত্‍সা সাহায্যদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের অর্থ মঞ্জুরী প্রদান৷
৫৪৷ কম্পাউন্ডার, নার্স এবং অন্যান্য চিকিত্‍সাক
র্মীদের কাজ ও ডিসপেনসারী পরিদর্শন৷
৫৫৷ ইউনানী, আ
য়ুর্বেদীয় ও হোমিওপ্যাথিক ডিসপেনসারী প্রতিষ্ঠা, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিদর্শন৷
৫৬৷ 
স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মাতৃসদন ও শিশু মংগল কেন্দ্র স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিদর্শন, ধাত্রীদের প্রশিক্ষণ দান এবং মাতা ও শিশুদের কল্যাণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ৷
৫৭৷ পশু-পাখীর ব্যাধি দূরীকরণ এবং পশু-পাখীদের মধ্যে ছোঁয়াচে রোগের প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ৷
৫৮৷ গবাদি পশুসম্পদ সংরক্ষণ৷
৫৯৷ চারণভুমির ব্যবস্থা ও উন্নয়ন৷
৬০৷ 
দুগ্ধ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ, দুগ্ধপল্লী স্থাপন এবং স্বাস্থ্যসম্মত আস্তাবলের ব্যবস্থা ও নিয়ন্ত্রণ৷
৬১৷ গবাদি খামার ও দুগ্ধ খামার স্থাপন ও সংরক্ষণ৷
৬২৷ হাঁস-মুরগীর খামার স্থাপন ও সংরক্ষণ৷
৬৩৷ জনস্বাস্থ্য, পশুপালন ও পাখী কল্যাণ উন্নয়নের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ৷

(চ) গণপূর্ত 
৬৪৷ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সাধন৷
৬৫৷ 
পানি নিষ্কাশন, পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, ভূ-উপরিস্থ সুপেয় পানির জলাশয় সংরক্ষণ, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, রাস্তা পাকাকরণ ও অন্যান্য জনহিতকর অত্যাবশ্যকীয় কাজ করা৷
৬৬৷ স্থানীয় এলাকার নকশা প্রণয়ন৷
৬৭৷ 
এই আইন বা অন্য কোন আইনর অধীনে ন্যস্ত কোন দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় অথচ এই আইনের অন্যত্র উল্লেখ নাই এমন জনকল্যাণমূলখ অত্যাবশ্যকীয় কাজের নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনা৷
৬৮৷ স্থানীয় এলাকা ও উহার অধিবাসীদের ধ
র্মীয়, নৈতিক ও বৈষয়িক উন্নতি সাধনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ


জেলা পরিষদ বাতিলকরণ 
যদি প্রয়োজনীয় তদন্তের পর সরকার এইরূপ অভিমত পোষণ করে যে, পরিষদ-
(ঙ) তার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ অথবা ক্রমাগতভাবে তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে;
(চ) তার প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব পালনে অসমর্থ;
(ছ) সাধারণত: এইরকম কাজ করে যা জনস্বার্থ বিরোধী ;
(জ) অন্য কোনোভাবে তার ক্ষমতার সীমা লংঘন বা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে বা করছে

তাহলে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রকাশিত আদেশ দ্বারা উক্ত পরিষদকে বাতিল করতে পারে৷ তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত আদেশ প্রদানের পূর্বে পরিষদকে তার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর সুযোগ প্রদান করতে পারবে৷

জেলা পরিষদ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে জেলা পরিষদ আইন
, ২০০০ (২০০০ সালের ১৯ নং আইন) দেখা যেতে পারে৷ 

তাছাড়া নিচের বইগুলো থেকেও সাহায্য পেতে পারেন:
১) জেলায় জেলায় সরকার, আবুল মাল আবদুল মুহিত, ইউনিভারসিটি পেস লিঃ, ২০০২
২) 
Local People’s Institution, Biswajit Mallick, A H Development Publishing House,2004
৩) স্থানীয় সরকার এবং সাংবাদিকতা, এ আর ডি পাবলিকেশন, ডিসেম্বর ২০০৩
৪) বাংলাদেশে জেলা প্রশাসন, কাজী আজহার আলী, সূচীপত্র প্রকাশনী, ২০০৩