Saturday, June 16, 2012

যে কারণে বাংলালায়ন এবং কিউবী টিকে থাকবে না


বাংলাদেশে অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে ২০০৮ সালের নভেম্বরে ওয়াইম্যাক্স লাইসেন্স দেয়া হয়েছিল। মোট ৩টি লাইসেন্স দেয়ার কথা থাকলেও, কার্যত ২টি প্রতিষ্ঠান (বাংলালায়ন এবং কিউবী) প্রত্যেকে ২১৫ কোটি টাকা ফি দিয়ে লাইসেন্স নিয়েছিল। এবং তৃতীয় অবস্থানে থাকা ব্র্যাক তাদের লাইসেন্স নেয়নি। পরবর্তিতে তাদের জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে। সরকারী প্রতিষ্ঠান বিটিসিএলকে একটা লাইসেন্স দেয়া হয়েছিল। তারা বলেছে, এই লাইসেন্স তারা আর নেবে না! এ বছর সরকার একই সাথে থ্রি-জি এবং ফোর-জি'র লাইসেন্স দেবে বলে নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে। আসুন দেখা যাক, বাংলাদেশে এই দুটি ওয়াইম্যাক্স কোম্পানি বেঁচে থাকবে কি না!


প্রথমেই একটি বিষয় পরিষ্কার করে নেয়া প্রয়োজন। এই রিভিউটি মূলত একটি তাত্ত্বিক আলোচনা। এর সাথে অনেকেই দ্বিমত পোষণ করতে পারেন। এবং সেই সুচিন্তিত মতামতগুলো এখানে গ্রন্থিত হলে সেটা আমাদের দেশের প্রযুক্তির সাথে যুক্ত মানুষদের ভাবনার দুয়ার আরো প্রসারিত করবে বলেই আমরা মনে করি। পাশাপাশি, এই ওয়াইম্যাক্স সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কিছুদিন পরেই শেয়ার বাজার থেকে মূলধন যোগার করার চেষ্টা করবে। ইতোমধ্যেই তারা সেই প্রস্তুতি শুরু করেছ। তাই আমাদের সাধারণ মানুষেরও জানার প্রয়োজন রয়েছে, এই কোম্পানিগুলোর ভবিষ্যৎ কী!

আপনাদের সুচিন্তিত মতামত পেলে এই রিভিউটি আরো সমৃদ্ধ হবে, আমরা সেটাই কামনা করি। এবারে চলুন দেখা যাক, কি কি বিষয়ের জন্য আমরা মনে করছি, ওয়াইম্যাক্স কোম্পানিগুলো বেঁচে থাকবে না।

কারণ-১: প্রযুক্তিগত পট পরিবর্তন
ওয়্যারলেস প্রযুক্তির সবচে বড় বাঁধা হলো জনপ্রিয়তা। আবার এটাই হলো ওয়্যারলেসের শক্তি। যে প্রযুক্তি মানুষ/অপারেটর সবচে বেশি ব্যবহার করবে, সেটাই আর্থিকভাবে সফল হয়ে টিকে থাকবে। যে কারণে সারা বিশ্বে জিএসএম (GSM) প্রযুক্তির এই জয়জয়কার। ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তিটি সেভাবে সারা বিশ্বে গৃহীত হয়নি। বিশ্বের সবচে বড় ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তি নেটওয়ার্ক বসাতে গিয়েছিল আমেরিকার স্প্রিন্ট। তাদের সেই পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে হয়েছে। এবং তারা সেখান থেকে সরে এসে এলটিই প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকে পড়েছে। ফলে, বিশ্বব্যাপী ওয়াইম্যাক্স নিয়ে যে অগ্রগতির সম্ভাবনা ছিল সেই স্বপ্ন বৃথা হতে চলেছে। এমনকি সেই প্রজেক্ট থেকে গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানও তাদের বিনিয়োগ তুলে নিয়েছে।

আবার মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তি বসানোর পরিকল্পনা থাকলেও সেগুলো ধীর গতির হয়ে পড়েছে। ফলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন থেমে যাবে। তাতে বাংলালায়ন বা কিউবী'র সমস্যা কী?

বাংলালায়ন বা কিউবীর শক্তি এতো বড় নয় যে, তারা পৃথিবীর কোনও প্রযুক্তিতে ড্রাইভ করতে পারে। তাদেরকে নির্ভর করতে হবে উন্নত দেশগুলোর উপর। পাশাপাশি, যে ডিভাইস দিয়ে মানুষ ওয়াইম্যাক্স ব্যবহার করবে, সেগুলোর মূল্যও কমবে না। আমরা এখনও আটকে আছি সেই ইউএসবি "ডঙ্গল" বা ফিক্সড ওয়াই-ফাই মডেম-এর যুগে। বাংলাদেশের ওয়াইম্যাক্স কোম্পানিগুলোকে এর চেয়ে বেশি আর কিছু করতে পারবে না।

কারণ-২: ফিক্সড বনাম মোবাইল ওয়াইম্যাক্স
বাংলালায়ন এবং কিউবী যদিও লাইসেন্স পেয়েছে "মোবাইল ওয়াইম্যাক্স" প্রযুক্তির (802.16e), কিন্তু তারা কতটা মোবাইল ব্রডব্যান্ড দিচ্ছে, আর আমাদের সেই চাহিদা কতটা রয়েছে সেটা সময়ের বিচারে গিয়ে দাঁড়াবে। আমাদের টিম একটি গাড়িতে করে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় ল্যাপটপের সাথে ইউএসবি মডেল লাগিয়ে ওয়াইম্যাক্স গতি পরীক্ষা করে দেখেছে। ধানমন্ডি থেকে গুলশান যেতেই কতবার যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে তা বলার মতো নয়। তারা যদি দাবি করেও থাকেন "মোবাইল ব্রডব্যান্ড" নেটওয়ার্ক করেছেন, কিন্তু বাস্তবতা হলো, গ্রাহক হিসেবে আমরা পাচ্ছি "ফিক্সড ওয়াইম্যাক্স" (802.16) - যা মোবাইল হিসেবে মোটেও ভালো গতি দেয় না।

সাধারণ মানুষের এই জটিল বিষয়টি ততটা না বুঝলেও চলবে। যে বিষয়টি আমরা তুলে ধরছি তা হলো, ঢাকা শহরেই নিরবিচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক নেই। এই ৩ বছরেও সেটা করা হয়নি। এবং এই নিরবিচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক বসাতে গেলে যে পরিমাণ টাকার প্রয়োজন সেই বিনিয়োগটি সফল হবে না। (পরিবর্তীতে আলোচনা করা হলো)।

আর, আমাদের হাতে এখন ওয়াইম্যাক্স মোবাইল ডিভাইসও নেই। ফলে গাড়িতে বা চলার পথে আপনাকে বড় একটি ল্যাপটপ নিয়ে তার সাথে ইউএসবি মডেম লাগিয়ে আপনাকে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হবে। আপনি মোবাইল ফোন বা ট্যাবলেটে সেই সুবিধা পাবেন না। এবং ভবিষ্যতও পাবেন বলে মনে হয় না। ফলে, এই বাংলালায়ন এবং কিউবী মূলত ফিক্সড ব্রডব্যান্ড কোম্পানি হিসেবেই রয়ে যাবে, যদিও তারা ২১৫ কোটি টাকা দিয়ে লাইসেন্স নিয়েছে মোবাইল ব্রডব্যান্ডের।

মোবাইল ওয়াইম্যাক্সের আওতায়, তাদের টেলিফোন সেবাসহ আরো কিছু বেসিক সেবা দেয়ার কথা থাকলেও, বিগত ৩ বছরে তারা এখনও আই.পি টেলিফোনীর মতো সহজ সেবাও চালু করতে পারেনি। এবং ভবিষ্যতে চালু করলেও সেটা ব্যবসায়ীকভাবে মার খাবে।

কারণ-৩: ফিক্সড ওয়াইম্যাক্স প্রতিযোগিতা
উপরে যেহেতু মোবাইল এবং ফিক্সড ব্রডব্যান্ড নিয়ে কথা হলো, তাই আরেকটি বড় কারণ এর সাথেই উল্লেখ করা যেতে পারে - ফিক্সড ওয়াইম্যাক্স প্রতিযোগিতা। বাংলাদেশে ৬টি কোম্পানিকে ফিক্সড ওয়াইম্যাক্স হিসেবে অপারেট করার অনুমতি দিয়েছে বিটিআরসি। তার ভেতর আমরা "ওলো" নামের একটি কোম্পানির অপারেশন দেখতে পাচ্ছি। আরো ৫টি আসি আসি করছে। এবং এরা সবাই খুবই কম মূল্যে (সম্ভবত কয়েক কোটি টাকা লাইসেন্স ফি) লাইসেন্স পেয়েছে। এবং আর সবাই প্রতিযোগিতা করবে বাংলালায়ন এবং কিউবীর সাথে - একই পণ্য/সেবা নিয়ে। আর এই নতুন ফিক্সড ওয়াইম্যাক্সের বিনিয়োগ যেহেতু তুলনামূলকভাবে কম হবে, তাই তারা অনেক কম মূল্যে বেশি ব্যান্ডউইথ দিতে পারবে। এবং তাতে বাংলালায়ন এবং কিউবী'র মাথা খারাপ অবস্থা হবে। শোনা যাচ্ছে, বাংলালায়ন এবং কিউবী যৌথভাবে ওলো'র সেবা ঠেকানোর জন্য মামলা করবে। সেই মামলাটি দেখার মতো হবে বটে।

কারণ-৪: ব্যবসা পরিকল্পনা
উপরের কারণগুলোর সাথে যোগ হয়েছে ব্যবসা পরিকল্পনা। যখন ওয়াইম্যাক্স লাইসেন্স দেয়া হয়েছিল তখন বাজারে এমন একটা হাইপ তৈরি করা হয়েছিল যে, একটি টাওয়ার দিয়ে ৩০ মাইল পর্যন্ত কভারেজ দেয়া যাবে (এমন সরলীকরণ কথা যে আমরা কেন বলি!)। ঢাকায় ওয়াইম্যাক্সের উপর বিশেষ সেমিনার করা হয়েছিল, এবং সেখানে বিটিআরসি'র তৎকালিন চেয়ারম্যানসহ বক্তরা জোর দাবি করেছিলেন যে, ওয়াইম্যাক্স মানেই হলো বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে কম খরচে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে ওয়াইম‌্যাক্স। ওয়াইম্যাক্স এলেই আমাদের দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। সেই ঢেউয়ের সাথে তাল দিতে গিয়ে লাইসেন্স ফি হয়ে গেলো আকাশচুম্বী - মাত্র ২১৫ কোটি টাকা।

প্রথম ধাক্কাতেই বিশাল বিনিয়োগ! আপনারা যদি বাংলালায়নের 'ইনভেস্টর রিলেশন' ওয়েব পেজে যান, তাহলে দেখতে পাবেন তারা বলছে এর ভেতর বাংলালায়ন ৪৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। তারা যেহেতু পাবলিক কোম্পানি হয়ে গিয়েছে, তাই এই তথ্য তাদের প্রকাশ করতে হবে। তারা ২০১১ সালের ৭ মে থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে অপারেট করছে, এবং শেয়ার বাজারে আসার জন্য অপেক্ষা করছে। এবারে দেখা যাক, এই ৪৫০ কোটি টাকা দিয়ে তারা কতটা উপার্জন করতে পারবে!

যদিও বিজ্ঞাপনে বলা হয়ে থাকে দুটো কোম্পানিরই গ্রাহক সংখ্যা বর্তমানে ১ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে, কিন্তু আসল চিত্র হলো - বাংলালায়নের সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা ৫০ হাজারের মতো, আর কিউবীর গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজারের মতো। এই গ্রাহক সংখ্যা হয়েছে বিগত ৩ বছর অপারেট করার পর। আগামী ৩ বছরে কি এই গ্রাহক সংখ্যা দ্বিগুণ হবে? বিশেষ করে বাংলাদেশে থ্রি-জি এবং ফোর-জি এলটিই চালু হলে, ওয়াইম্যাক্সের গ্রাহক সংখ্যা আরো কমে যেতে পারে। তাহলে দেখা যাক, এই গ্রাহক নিয়ে তারা কতটা ব্যবসা সফল হতে পারে?

হিসাবের সুবিধার জন্য যদি ধরেও নেই যে, তাদের প্রত্যেকের ১ লক্ষ করে গ্রাহক রয়েছে, তাহলে আমরা একটি সহজ অংক কষতে পারি।

আমরা বিভিন্ন রকমের সার্ভে এবং কোম্পানিগুলো মাসিক উপার্জন থেকে দেখতে পেয়েছি যে, তাদের গ্রাহক প্রতি আয় হলো মাসে ১,০০০/- টাকার নিচে। অর্থাৎ, গড়ে একজন গ্রাহক মাসে ১ হাজার টাকার ইন্টারনেট বিল দেন না। কেউ কেউ হয়তো ৫ হাজার টাকা বিল দেন, কিন্তু বেশিরভাগটাই অনেক কম - হয়তো ৩০০ টাকা দিয়ে মাস চালান।

১ লক্ষ গ্রাহকের কাছ থেকে ১,০০০ টাকা মাসে এলে, একটি কোম্পানির মাসিক আয় হলো ১,০০,০০০/- × ১,০০০ টাকা = ১০,০০,০০,০০০/- টাকা বা ১০ কোটি টাকা।

ভেতরের খবর হলো, বর্তমানে এদের কারোই মাসিক উপার্জন ১০ কোটি টাকা নয়। আলোচনার সুবিধার্থে, মাসে ১০ কোটি টাকা আয় হলেও, এদের আয় কি আরো বাড়বে? নাহ, এদের আয় এর চেয়ে বেশি আর হবে না, কারণ নতুন গ্রাহক বা সেবা এরা চালু করছে না। তারা পুরনো ধ্যান-ধারণার সেই বিজ্ঞাপনের উপরই নির্ভর করছে। তাহলে দেখা যাক, তাদের এই ১০ কোটি টাকায় চলে কি না!

- সাধারণত আয়ের শতকরা ৩৫-৪০ ভাগ চলে যায় অপারেটিং খরচ হিসেবে। সে হিসেবে এদের হাতে থাকতে পারে ৬.৫ কোটি টাকার মতো।
- ৪৫০ কোটি টাকার বাৎসরিক ব্যাংক সুদ হলো ৬৭.৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাসিক ৫.৬ কোটি টাকার মতো। (শতকরা ১৫% হারে। ব্যাংক সুদের হার আরো বেশি হতে পারে।)
- বাকি হিসাব না করলেও চলে।

তবে জানা গিয়েছে যে, কিউবী তাদের বিনিয়োগ নিয়ে নিজেদের ভেতর বেশ ঝামেলায় রয়েছে। এবং বাংলালায়ন একটা এক্সিট স্ট্রেটিজি খুঁজছে। হয়তো শেয়ার বাজার থেকে তারা টাকা তুলে নিতে চাইবে। কিংবা বিদেশী কোনও প্রতিষ্ঠান যদি তাদেরকে কিনে নেয়, তাহলে রক্ষা পেয়ে গেল।

কারণ-৫: কনটেন্ট
যারা এই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিচালনা করছেন, তারা একটি বিষয় মাথায় রাখেননি - সেটা হলো এই মানুষরা ইন্টারনেট দিয়ে করবে কী? বাংলাদেশের মানুষের বেশি কথা বলার একটা অভ্যাস রয়েছে। সেজন্য ভয়েস ব্যবসা ভালো করেছে। সারা দিন-রাত তারা কথা বলেই যাচ্ছে, আর মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো মুনাফা করছে। কিন্তু ডাটা কি একই পদ্ধতিতে চলে!

মানুষ ইন্টারনেট দিয়ে কী করে আসলে?
বাংলাদেশের মানুষ যে সকল ওয়েব সাইটে যায় তার উপরের দিকে রয়েছে গুগল, ফেসবুক, ইউটিউব, ইয়াহু এগুলো। তারপর রয়েছে কয়েকটি বাংলা ওয়েব সাইট, তারপর বিভিন্ন রকমের নিউজ সাইট, আর পর্ণোগ্রাফি। এই তো! এর বাইরে কি আসলেই কিছু আছে? যারা ফ্রিল্যান্সিং করেন, তারা তাদের কয়েকটি ওয়েবসাইটে যান, এবং নিজেদের কাজের জন্য ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করেন। এর বাইরে কিন্তু আর তেমন কিছুই নেই। লোকাল কনটেন্ট নেই বললেই চলে।

মোবাইল কোম্পানিগুলোর ইন্টারনেট অফার দেখুন! তাদের অফার মিনি প্যাক থেকে আরো মিনিতে চলে গিয়েছে। এগুলো কখন হয়? যখন মানুষ আসলে মাসে একটা নির্দিষ্ট টাকা ইন্টারনেটের জন্য ব্যয় করতে চায় না। আর ব্যয় করবেই বা কেন? তার সেই খরচ তো অর্থবহ হতে হবে!

বাংলাদেশে স্থানীয় কনটেন্ট তৈরির তেমন কোনও পদক্ষেপই নেয়নি এই ব্রডব্যান্ড কোম্পানিগুলো। তারা ভেবেছে, ইন্টারনেটের দাম কমালেই মানুষ বেশি বেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করবে। যে দেশের মানুষ ইংরেজি জ্ঞান খুবই সামান্য সেখানে আমরা তাদেরকে বলছি, ইংরেজি সাইট ভিজিট করতে। তাছাড়া স্থানীয় আর কোনও সেবাও ইন্টারনেটের মাধ্যমে এখনও করা যাচ্ছে না। ব্রডব্যান্ড কোম্পানিগুলো কোটি কোটি টাকা খরচ করছে বিজ্ঞাপনে, কিন্তু কানা-কড়িও খরচ করছে না কনটেন্ট তৈরি করতে। এটা থেকেই বুঝা যায়, তাদের দৃষ্টি কতটা টানেল ভিশন। তারা যদি ১০০ বা ২০০টি প্রতিষ্ঠানের সাথে মিলে কনটেন্ট তৈরি করতো, তাহলেই না মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহারে উৎসাহিত হতো! তারা ভেবেছেন, ঠিক আছে কনটেন্ট করবে অন্য মানুষ, আর আমরা পয়সা বানাবো ব্যান্ডউইথ বিক্রি করে। আর সেকারণেই তাদেরকে প্রতিদিন মিনি প্যাকের কথা ভাবতে হয়। এবং সেই উপার্জন খুবই সামান্য।

আমরা আজকে আলোচনা করলাম, বাংলাদেশে ওয়াইম্যাক্স কোম্পানি কেন টিকে থাকবে না। আর কোনও পয়েন্ট বাদ পড়লে আপনারা সেগুলো এখানে মন্তব‌্য হিসেবে দিতে পারেন। তবে আমরা চাই না, কোনও প্রতিষ্ঠান ব্যর্থ হোক। তাতে দেশের অনেক সম্পদ নষ্ট হয়, মানুষ কাজ হারায়। প্রতিষ্ঠানগুলো যদি সফল হয়, তাহলে সেটা অর্থনীতিতে অনেকভাবে অবদান রাখতে পারে।

আমরা পরবর্তীতে দেখানোর চেষ্টা করবো, বাংলাদেশে থ্রি-জি কিংবা ফোর-জি এলে তাতে গ্রাহকদের কী লাভ হতে পারে, কিংবা আসলেই কোনও লাভ হবে কি না! কম খরচে আসলেই কি আমরা ইন্টারনেট পাবো?