Monday, October 15, 2012

বাংলাদেশ ডিজিটালাইজড বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে


বাংলাদেশ ডিজিটালাইজড বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে

লেখক: ইত্তেফাকরিপোর্ট  |  সোমবার, ১৫ অক্টোবর ২০১২, ৩০ আশ্বিন ১৪১৯
Details
টেলিটকের থ্রিজি উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ডিজিটালাইজড বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে দেশে প্রায় ১০ কোটি মোবাইল ফোনের সিম ব্যবহূত হচ্ছে। প্রায় ২৫ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট সেবা নিচ্ছে। আমরা ধনী-গরীব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত সকলের জন্য প্রযুক্তি বিভেদমুক্ত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছি। গতকাল রবিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী একমাত্র রাষ্ট্রীয় মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকে থ্রিজি প্রযুক্তির মোবাইল সেবার বাণিজ্যিক ব্যবহারের পরীক্ষামূলক উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, টেলিটকের বহু প্রতীক্ষিত থ্রিজি সেবা চালুর মাধ্যমে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে আজ এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হল। মোবাইল টেলিফোন খাতে থ্রিজি’র সংযোজন করে বাংলাদেশ প্রযুক্তিতে এগিয়ে থাকা দেশগুলোর স্তরে উন্নীত হল। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী এডভোকেট সাহারা খাতুনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইটি বিশেষজ্ঞ ও প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়, ডাক ও  টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব সুনীল কান্তি বোস ও বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জুন বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, নৌমন্ত্রী শাজাহান খানসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, কূটনীতিক, মহাজোট সরকারের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রী বোতাম টিপে টেলিটক থ্রিজি প্রযুক্তির  উদ্বোধন করেন। তিনি থ্রিজি প্রযুক্তির মাধ্যমে মোবাইল ফোনে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সঙ্গে ছবি দেখে কথা বলেন। তিনি এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে টেলিফোনে আজিমপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সঙ্গেও কথা বলেন। এই স্কুলেই পড়াশোনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইসিটিই পারে উন্নয়নের বহুমাত্রিক ধারা দ্রুত ও স্বল্প ব্যয়ে তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছে দিতে। তথ্য প্রতিযোগিতার যুগে টিকে থাকতে তার ১৯৯৬ সালের সরকারের আমলে মোবাইল ফোনের মনোপলি ভেঙ্গে দিয়ে তা সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। এ খাতকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ করে দিতে কম্পিউটার সামগ্রীর ওপর থেকে আমদানি শুল্ক ও কর প্রত্যাহার করে তা সবার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনা হয়েছে। তিনি বলেন, এবার দায়িত্ব নেয়ার পরপরই তার সরকার আইসিটি আইন ও নীতি এবং টেলিকম আইন প্রণয়ন করেছে। পার্বত্য এলাকাসহ সারাদেশকে মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে এবং মোবাইলে বাংলায় এসএমএস পাঠানোর সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে থ্রিজি সংযোজনে সহায়তার জন্য চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানান। ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী এডভোকেট সাহারা খাতুন বলেন, এবার ক্ষমতায় আসার পর আমরা টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তির মহাসড়কে প্রবেশ করি। ডিজিটাল অগ্রযাত্রায় সরকারের সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সজিব ওয়াজেদ জয় বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে আবার ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশে ‘ফোরজি’ সেবা চালু করা হবে। তিনি বলেন, থ্রিজি লাইসেন্স পলিসি চূড়ান্ত হচ্ছে এবং অন্যান্য মোবাইল ফোন অপারেটররাও শিগগিরই নিলামের (অকসন) মাধ্যমে থ্রিজি লাইসেন্স পাবে। আমরা চেয়েছি কিভাবে প্রযুক্তির সুবিধা মফস্বল বা গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়। আমরা চাইনি ডিজিটাল সার্ভিসে শহরে মানুষ লাভবান হোক আর গ্রামের মানুষ পিছিয়ে পড়ুক। ‘এ টু আই’ সেলের মাধ্যমে আমরা তা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। টেলিযোগাযোগ সচিব সুনীল কান্তি বোস বলেন, আজ থ্রিজি প্রযুক্তি চালুর মধ্য দিয়ে তথ্য প্রযুক্তিখাতে একটি বিপ্লব ঘটানো সম্ভব হল। এ সেবার মাধ্যমে জনগণ দ্রুতগতির মোবাইল ফোনসেবা পাবেন। থ্রিজি প্রযুক্তি চালুর কারিগরি উন্নয়ন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে ভূমিকা রাখায় সজিব ওয়াজেদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
সূত্র জানায়, আজ সোমবার থেকে রাজধানীর টেলিটকের তিন হাজার রিটেইল পয়েন্ট এবং ৮টি কাস্টমার সেন্টার কেন্দ্র থেকে থ্রিজি’র সিম বিক্রি শুরু হবে। তাছাড়া যারা পুরনো সিম থ্রিজিতে রুপান্তর করতে চায় তাদের কাস্টমার সেন্টারে গিয়ে এটি করতে হবে। প্রথম পর্যায়ে বিটিভি, সময় টিভি, আরটিভি, মাইটিভি এবং জিটিভি মোবাইল ফোনে দেখা যাবে। আপাতত শুধু রাজধানী ও আশপাশের ৪ লাখ গ্রাহক এই সুবিধা পাবেন। এ বছরের শেষ নাগাদ চট্রগ্রামে চালু করা হবে থ্রিজি। নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কাজ শেষ হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ভয়েস কলের (শুধু কথা বলা) রেট এখন যা আছে থ্রিজি’তেও তাই থাকবে। টেলিটকের থ্রিজির সব সার্ভিসেই ১০ সেকেন্ড পালস সুবিধা থাকবে।

No comments:

Post a Comment

Thanks for visiting.