Monday, July 22, 2013

৩-৭ নভেম্বর ১৯৭৫ এর ঘটনাবলি


ঐতিহাসিক ৭ই নভেম্বরঃ ইতিহাসের কুয়াশাচ্ছন্ন অধ্যায়
নভেম্বর ২-৭। বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে কুয়াশাচ্ছন এবং ঘোলাটে অধ্যায়। এ সময়ে ইতিহাসকে সব সময় রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যয়ন করা হয়েছে; বিকৃত করা হয়েছে। আসল সত্যটা মানুষের কাছ থেকে আড়াল করার প্রয়াস হয়েছে। অনেকে এটাকে বলেন “কলঙ্কিত অধ্যায়’ কিংবা “মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দিবস’ আবার অনেকেই বলেন ‘জাতীয় সংহতি এবং বিপ্লব দিবস’। যারা এটাকে “কলঙ্কিত অধ্যায়’ বলেন তারা যে এটাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বলেন না তার প্রমাণ কী? আর যারা বলেন ‘জাতীয় বিপ্লব এবংসংহতি দিবস’ তারাই বা কতটুকু সত্যাশ্রয়ী? তারা যদি সত্যাশ্রয়ীই হন তাহলে কেন তাদের আলোচনায় দিবসটির প্রধান কুশীলব কর্ণেল তাহের উহ্য থাকেন? এসব প্রশ্নের মাঝে দাঁড়িয়ে সত্যটুকু জানার প্রচেষ্টা এ লেখা।

জাতির জনক শেখ মুজিব রহামানের দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা ছিল;কিন্তু দেশ পরিচালনায় তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতার ঘাটতি ছিল প্রকট। তাছাড়া কিছু ঘটানা এবং তাঁর অপপরিপক্ক কিছু সিদ্বান্ত জনগন ও সেনাবাহীনিতে বিরুপ প্রতিক্রিয়া ফেলে। আর সে সময়ে এর সদ্ব্যবহার করে সেনাবাহীনির কিছু ক্ষমতালোভী, উচ্ছৃঙ্খল সদস্যেরা। অনেকেই তখন রাজনৈতিক পট পরিবর্তন চাচ্ছিলেন; কিন্তু সেটা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে সরাকারকে সরে যেতে বাধ্য করা মধ্য দিয়ে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিল জাসদ। ১৫ অগাস্টের ভোরেই কর্ণেল তাহের ক্রাচে ভর দিয়ে ভাই আনোয়ার ও জাসদ নেতা ইনুকে নিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন শাহবাগ রেডিও স্টেশনে। ঘটনার কুশীলব মোশতাক ও মেজর রশীদকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর অবস্থন। বলেছিলেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তন তিনি চাইছিলেন ঠিকই, কিন্তু এমন কাপুরুষ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নয়”।বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে ১৫ আগস্টে কেউ রক্ষা করার উদ্যোগ নেয়নি। যে বড় মাপের মানুষ গোটা জাতিকে স্বাধীনতার পথে নিয়ে গেলেন পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে, সে মহামানবকে প্রাণ দিতে হলো অসহায়ভাবে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরও কিন্তু প্রচুর সময় ছিল হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার। সরকারকে রক্ষা করা যেত এবং উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুর স্থলাভিষিক্ত হয়ে দেশকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হতেন, যদি তিন বাহিনীর প্রধান সম্মিলিতভাবে খুনিদের বিরুদ্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করতেন। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে নারকীয় ঘটনার বেশ কয়েক ঘণ্টা পরে তিন বাহিনীর প্রধান খন্দকার মোশতাকের প্রতি তাঁদের আনুগত্য প্রকাশ করলেন। এবং তারপর তিন মাস চলে গেল কেউ কিছু করতে পারলেন না।

অবশেষে মেজর ফারুক. মেজর রশিদ এবং খন্দকার মোশতাক আহমেদ-এর গড়া সরকার আরও একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ৩রা নভেম্বর, ১৯৭৫-এ ক্ষমতাচ্যুত হয়। এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন জেনারেল খালেদ মোশাররফ, বীর উত্তম, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।

৩ নভেম্বর খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে যে পাল্টা অভ্যুত্থান হয়েছিল তা নিয়ে অন্তত তিনটি অভিমত প্রচলিত আছে। এক. ১৫ আগস্টের কুশীলব মেজর বাহিনীর কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলা বা চেইন অব কমান্ড সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছিল। বঙ্গভবনে অবস্থান নিয়ে তারা একাধারে দেশ ও সেনাবাহিনী পরিচালনার মতো নৈরাজ্যের সৃষ্টি করেছিল। অবশ্য সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা, যা ১৫ আগস্ট থেকেই শুরু হয়েছিল বিপন্ন বিষয়ের ব্যাপারে। যা হোক, বলা হয়ে থাকে খালেদ মোশাররফের লক্ষ্য ছিল অবনতিশীল পরিস্থিতির রাশ টেনে ধরা এবং সেনাবাহিনীতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। উপরন্তু অভ্যুত্থানটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সপক্ষেও পরিচালিত হয়েছিল এমন ধারণা ছিল। দুই. বাকশাল ও ভারতপন্থিদের সপক্ষে ছিল এই অভ্যুত্থান। এমন অভিমত তৈরি হওয়ার কারণ ছিল অভ্যুত্থান হওয়ার পরপরই খালেদ মোশাররফের মা'র নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি অভিমুখে মিছিল যাওয়া। মিছিলটি যে কারণেই হোক না কেন, তা খালেদ মোশাররফের জন্য প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। তিন. সেনাপ্রধানের পদ করায়ত্ত করার লক্ষ্যে খালেদ মোশাররফের ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষার কারণে এ অভ্যুত্থান।

৩রা নভেম্বরের অভ্যুত্থানে জেনারেল খালেদ মোশাররফ রক্তপাতহীন অভ্যুত্থান ঘটাতে চেয়েছিলেন। তাই মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে তার নিজ বাসভবনে গৃহবন্দী করে রাখেন। কর্নেল (অবঃ) আবু তাহের সে সময় চট্টগ্রামে অবস্থান করছিলেন। কর্নেল তাহের ছিলেন জিয়াউর রহমানের একজন বিশেষ শুভাকাংখী। তিনি সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন। সৈনিক-অফিসার বৈষম্য তার পছন্দ ছিলনা। তার এই নীতির জন্য তাহের সেনাবাহিনীর সাধারন সৈনিকদের মাঝেও দারুন জনপ্রিয় ছিলেন। কর্নেল তাহের বিশ্বাস করতেন জিয়াও তারই আদর্শের লোক। ৩রা নভেম্বরের অভ্যুত্থানের পর তাহের জানতে পারেন জিয়াউর রহমানকে বন্দী করা হয়েছে। তিনি ঢাকাতে তার অনুগত ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সিপাহীদের বিদ্রোহের নির্দেশ দিয়ে তৎক্ষনাত চট্টগ্রামে থেকে ঢাকা রওনা হন, এ সময় তার সঙ্গী ছিল শত শত জাসদ কর্মী। কর্নেল তাহেরের এই পাল্টা অভ্যুত্থান সফল হয় ৭ই নভেম্বর। কর্নেল তাহের, জিয়উর রহমানকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে মুক্ত করে নিয়ে আসেন। পাল্টা এই অভ্যুত্থানে ইষ্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈন্যরা জেনারেল খালেদ মোশাররফকে হত্যা করে।

এরপর জেনারেল জিয়া ক্ষমতায় উঠে আসেন। তিনি রহস্যজনক কারনে কর্নেল (অবঃ) আবু তাহেরের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীতার অভিযোগ আনেন। এতে ১৯৭৬ সালের ২১শে জুলাই কর্নেল তাহেরের ফাঁসি হয়। ধারনা করা হয় ৭ই নভেম্বরে কর্নেল তাহেরের জনপ্রিয়তা দেখে জিয়াউর রহমান শংকিত ছিলেন। তাই ক্ষমতা নিষ্কন্টক রাখার জন্যই তাহেরের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীতার অভিযোগ আনেন।

৭ই নভেম্বরকে ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস” বলাটা কতটা যুক্তিসংযত। ক্ষমতা দখলের জন্য সেনাবাহিনীর উচ্চাভিলাষী কিছু অফিসারদের পারস্পরিক হানাহানি এবং নিষ্ঠুর হত্যাকান্ডকে বিপ্লব বলা চরম মূর্খতা ছাড়া আর কিছু নয়।যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের অবমুক্ত করা ওই সময়ের কিছু গোপন দলিল ও নথিপত্রের দেখা যায় যে ঢাকায় নিযুক্ত তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিস ইউজিন বোস্টার ‘৭ই নভেম্বররের সিপাহী বিদ্রোহ’কে মূলত সিপাদীদের রুটি-রুজির প্রশ্নে অসন্তোষের ফল হিসাবে মূল্যায়ন করেছেন।মার্কিন দূতাবাসের উপপ্রধান ছিলেন আরভিং জি. চেসল। তিনিও বিষয়টি সেভাবেই দেখেছেন। আর ৭ নভেম্বরকে সংহতি দিবস বলারও কোনো কারণ নেই,এদিন কার সাথে কার সংহতি হয়েছিল? জনগণের সাথে সিপাহীদের? ১৫ আগষ্টের পর হতে সেনাবাহিনীতে যা হচ্ছিল জনসাধারণের পক্ষে জানা সম্ভবই ছিল না; জনগণ ছিল নীরব দর্শক। আর সিপাহীদের মধ্যেও কোনোপ্রকার সংহতি হ্য় নি, বরং এটা ছিল সিপাহীদের মধ্যে একটা অংশের বিদ্রোহ। ৭ নভেম্বরের পরিস্থিতি সম্পর্কে ঢাকায় নিযুক্ত তত্কালীন রাষ্ট্রদূত ডেভিস ইউজিন বোস্টার লিখেছেন, ‘ঢাকা সেনানিবাসে শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে গোলাগুলি শুরু হয়। ক্ষুদ্র অস্ত্র (স্মল আর্মস) ও মর্টারের গোলাবর্ষণ চলে। সেনারা রেডিও স্টেশনের খুব কাছাকাছি পৌঁছে যায়। একটি সংবাদপত্রের দপ্তরেও একটি ছোট সেনাদল দেখা গেছে। দূতাবাসের কাছেও গোলাবর্ষণের আওয়াজ মিলছে। আমরা মনে করি যে, সেনাবাহিনীর প্রতিদ্বন্দ্বী উপদলগুলো প্রকাশ্য সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। এয়ারপোর্ট রোডে বসবাসরত একজন বাঙালি সহকারী একটি ট্রাকবোঝাই সেনাদের স্লোগান শুনেছেন। তাঁরা স্লোগান দিচ্ছেন: জেনারেল জিয়া জিন্দাবাদ।’ সিপাহীদের মধ্যে যে সংহতি হয় নি তার প্রমাণ জেনারেল জিয়াউর রহমান তার পাচ বছরের শাসনামলে প্রায় ২১টি অভ্যুত্থানের মুখোমুখি হয়েছিলেন। ২১টি অভ্যুত্থান থেকে বেঁচে গেলেও ২২তম অভ্যুত্থানে তিনি মৃত্যুবরন করেন। এর অধিকাংশই ছিল ১৯৭১ সালের সেই সকল মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের সমন্বয়ে গঠিত, যারা জিয়ার ইসলামিক ভাবাপন্ন দলের সাথে সম্পর্ক সহ্য করতে পারেননি।

৭ই নভেম্বরের ঘটনা ‘বিদ্রোহ’ ছিল; কোনোমতেই ‘বিপ্লব’ নয়। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ সালের ১১ এবং ১২ই নভেম্বর দুটি বেতার ভাষণ দেন। এতে তিনি ৭ নভেম্বরের ঘটনাকে সিপাহি-জনতার বিপ্লব বলে দাবি করেননি। বরং তিনি ওই দিন সেনাবাহিনীতে ‘বিশৃঙ্খলা’ সৃষ্টির জন্য জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলকে (জাসদ) দায়ী করেছিলেন।

জিয়া এ ভাষনে আরও বলেন, “তিনি একজন সৈনিক, রাজনীতিক নন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, সামরিক আইন তুলে নিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ’। তাঁর ভাষায়, এ সরকার ‘সম্পূর্ণরূপে নির্দলীয় ও অরাজনৈতিক। সেদিন তিনি ওয়াদা করেছিলেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তিনি নির্বাচন দিয়ে দ্রুত ব্যারাকে ফিরে যাবেন। ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় প্রদত্ত আরেকটি ভাষনেও তিনি একই কথা বলেন। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে, তিনি তাঁর কথা রাখেননি।

বরং তিনি তার রক্ষাকর্তা কর্নেল তাহেরকে রাষ্ট্রদ্রোহী আখ্যা দিয়ে ফাঁসির দড়িতে ঝুলান। বেশিরভাগ ইতিহাসবিদ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক এর কারণ হিসাবে তাহেরের জনপ্রিয়তাকেই কারণ বলে মনে করেন। সৈনিকদের মধ্যে তাহের জনপ্রিয়তা ভবিষ্যতে জিয়ার কর্তৃত্বে আঘাত হানতে পারে বলেই তাকে পথ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তাদের অভিমত।

“৭ নভেম্বর ১৯৭৫ -আলো থেকে অন্ধকারে পতিত হওয়ার কাহিনী” শীর্ষক কলামে কলামিস্ট সৈয়দ বদরুল আহ্সান লিখছেন,

“…স্মরণ করুন ৭ নভেম্বরের ভয়াবহ দৃশ্যগুলো। বিভিন্ন সেনানিবাসে দেশপ্রেমিক সৈনিক ও অফিসারদের হত্যা করার পর্ব চলছে। কোনো দলিল নেই এবং কোনো প্রমাণ নেই যে কর্নেল তাহের এবং জেনারেল জিয়া চেষ্টা করেছেন খালেদ মোশাররফ ও তাঁর সহযোগীদের প্রাণে বাঁচাতে। রাজধানী ঢাকার সড়কে সেই পাকিস্তানি কায়দায় স্লোগান শোনা গেল পুরো উদ্যমে। যে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ শোনা গিয়েছিল ১৫ আগস্টের ভোরবেলায়, সেই ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ই আরও জোরালোভাবে আমাদের শোনানো হলো ৭ নভেম্বরে। গোটা বাংলাদেশটাকে মনে হলো একটি ছোট পাকিস্তান। আবার এও বলা যায় যে সেদিন আমাদের কাছে মনে হয়েছিল, দেশটি একটি বানানা রিপাবলিকে পরিণত হয়েছে। যে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আমরা পাকিস্তানে সংগ্রাম করেছি এবং সংগ্রামে জয়ী হয়েছি, সেই সামরিক শাসন আবার স্বাধীন বাংলাদেশে আমাদের জীবনের ধারাটাকে একেবারে ইতিহাসবিরোধী একটি স্রোতে পরিণত করে দিল। ……৭ নভেম্বর ১৯৭৫-এর কারণেই এ দেশে ইতিহাস বিকৃতির সূচনা হয় এবং এই দিনটি সুযোগ করে দেয় সেই পুরোনো পাকিস্তানি দোসরদের, যাতে করে তারা বাংলাদেশে সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরে আসতে পারে।
এসব কথা শেষ হওয়ার নয়। আমাদের আঁধার এখনো কাটেনি। যে আলোর ভুবন আমরা তৈরি করেছিলাম মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের দ্বারা, সেই ভুবনটি আঁধারে ছেয়ে গেছে ওই দিন, যেদিন খালেদ মোশাররফকে প্রাণ দিতে হলো এই স্বাধীন দেশে।”।

একাত্তরের পরাজিত চক্রের সগর্ব প্রত্যাবর্তন এবং পুনর্বাসন ছাড়া এই বিপ্লবের আর কোন ফল অন্তত দৃষ্টত চোখে ধরা পড়ে না। পঁচাত্তরের নভেম্বারের অফিসার হত্যাকে যদি বিপ্লব বলে গ্লরিফাই করা হয়, তাহলে মাঝে মাঝে এমন বিপ্লব করার মানসিকতা স্থায়ীভাবে দূর হবে কী করে? কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া পিলখানা ঘটনার দিনও ‘সিপাহি জনতা ভাই ভাই’- শ্লোগান উঠেছিল। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে এটারও কারণ ছিল রুটি-রূজির প্রশ্নে অসন্তোষ। যদি এ বিদ্রোহীরা সফল হতো এবং হাসিনা সরকারের পতন হয়ে পচাত্তরের মতো আরেকটি নুতন সরকার আসতো, তাহলে কি আমাদের জাতীয় জীবনে আরেকটি বিপ্লব-দিবস যোগ হতো!
কে এর জবাব দেবে?

৭ই নভেম্বর এর ঘটনা তাই ‘বিদ্রোহ”ই; বিপ্লব না। যে উদ্দেশ্য নিয়ে কর্ণেল তাহের ও জাসদ নেতারা এবং সিপাহীদের কিছু অংশ বিদ্রোহ করেছিল সেটাও কি বাস্তবায়িত হয়েছে? এর ফলশ্র“তিতে প্রাণ দিতে হয়েছে কর্নেল তাহেরকে, প্রাণ দিতে হয়েছে আরও বহু মানুষকে। শত শত জাসদ কর্মীকে জেলের ভেতরে হত্যা করা হয়। আসলে ’৭১-এর পর আরও এক গণহত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে নিধন করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে এবং সুপ্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে প্রতিশক্তিকে। পুর্নবাসিত করা হয়েছিল জামাত ইসলামি এবং অনান্য মৌলাবাদী স্বাধীনতা বিরোধোদের। ফলে আজও পর্যন্ত আমাদের সেনাবাহিনী পূর্বসূরীদের আদল বা বৈশিষ্ট্য থেকে বেরিয়ে এসে আলাদা কিছু হয়েছে এমন বলার সময় আসেনি

3 comments:

  1. nice collection boss...

    ReplyDelete
    Replies
    1. who write this article he is s dalal of india and aligue

      Delete

Thanks for visiting.